Kerala

‘কেরল যাইবেন’, বুকিং করতে মরিয়া পরিযায়ীরা

পরিয়ায়ী স্পেশ্যালের গাদাগাদি ভিড়ে, জমানো টাকায় গাড়ি ভাড়া করে, কিংবা দিন পাঁচ-সাত বাসের মাথায় পাড়ি দিয়ে লকডাউনের আবহে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছিলেন ওঁরা।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ০৪:০০
Share:

সেই পোস্টার। ছবি: সফিউল্লা ইসলাম

দেওয়াল জুড়ে লম্বাটে পোস্টারে টানটান প্রস্তাব— ‘কেরল যাইবেন’!

Advertisement

বৃষ্টি ভেজা দেওয়ালে সুদৃশ্য বাসের ছবিটা কিঞ্চিৎ অস্পষ্ট। তা হোক, কেরল যাত্রার মাথাপিছু ভাড়া, যোগাযোগের নম্বর খুঁটিয়ে দেখে নিতে ডোমকলের সেই সরকারি দেওয়ালের নিচে চাক বেঁধেছে ছোটখাট ভিড়। বেড়াতে নয়, রুজি-রুটির স্বপ্ন হাতড়াতে ফের কেরল পাড়ি দিতে মরিয়া ওঁরা। বাস তৈরি, সিট বুকিং শেষ এখন ব্যাগ গুছিয়ে পাড়ি দিলেই হয়। যাত্রা শুরু ৬ অগস্ট।

পরিয়ায়ী স্পেশ্যালের গাদাগাদি ভিড়ে, জমানো টাকায় গাড়ি ভাড়া করে, কিংবা দিন পাঁচ-সাত বাসের মাথায় পাড়ি দিয়ে লকডাউনের আবহে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছিলেন ওঁরা। কিন্তু মাস ঘোরার আগেই ঘরে ফেরার স্বস্তি নিভে গিয়েছিল। নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসারে টানাটানি, এলাকায় কাজ না পেয়ে নিজের এলাকায় ফিরেও তাই ফের পরবাসে পাড়ি দিতে চাইছেন ওঁরা।

Advertisement

ভিড় ঠেলে বেরিয়ে এসে ডোমকলের পরিযায়ী শ্রমিক শামসুল হক বলছেন, ‘‘কী করব বলুন, লকডাউনের ফাঁদে পড়ে ঘরে ফিরেছিলাম ঠিকই কিন্তু এলাকায় কোনও কাজ নেই। সংসারের অনটন চরমে। ইদের আগে ছেলে মেয়েদের পোশাক দূরের কথা তাদের মিষ্টি কিনে দেওয়ার ক্ষমতাও নেই। ভিন রাজ্যের কাজই আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছিল, ওখানেই ফিরতে চাই।’’ একই সুর ফরিদপুর গ্রামের পরিযায়ী শ্রমিক ইয়াসিন মোল্লার, ‘‘ভেবেছিলাম এলাকায় ফিরে কিছু না কিছু কাজ জুটিয়ে নেব, কিন্তু কাজ দূরের কথা আমাদের পাওনা চাল-ডালটাও ঠিক মতো পেলাম না। তাই কেরলে ফিরে যাওয়াই ভাল।’’

কুড়িয়ে বাড়িয়ে সাড়ে ৬ হাজার টাকা জোগাড় করে, আধার আর ভোটার কার্ড নিয়ে তাই লস্করপুরের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তাঁরা। সে গ্রামের বাস-চালক নুর ইসলাম কেরল যাত্রার আয়োজন করেছেন। বাস নিয়ে দেশের আনাচ-কানাচে তাঁর অহরহ যাত্রা। নুর ইসলাম বলছেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের এই দুঃসময়ে তাই পাশে দাঁড়াতেই ওঁদের কেরলে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। বাসের অধিকাংশ টিকিটই বুকিং হয়ে গেছে।’’

আরও পড়ুন: মিথ্যে দাবি ও বেশি দাম, করোনার ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাকে নোটিস

ডোমকল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের রেখা বিবি বলছেন, ‘‘সরকারের কাছে আবেদন রেখেছিলাম শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্য, কিন্তু এত কম সময়ের মধ্যে তা আর করা গেল কোথায়, কোন ভরসায় ওঁদের থেকে যেতে বলি!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement