ছবি: শাটারস্টক
ঋতুকালীন তিন মহিলাকে গ্রাম থেকে বার করে দিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। গ্রামের ত্রিসীমানার বাইরে একটি নির্জন ঘরে তালাবন্দি করে রেখেছিলেন তাঁদেরকে। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। গ্রামবাসীদের বাধা কাটিয়ে তিন জনকেই উদ্ধার করেন তাঁরা। ঘটনাটি ঘটেছে কর্নাটকের টুমাকুরু জেলার এক গ্রামে।
এলাকাটি পরিচিত গুব্বি তালুক নামে। আদিবাসী, জনজাতি এবং উপজাতিদের বাস সেখানে। যে মহিলাদের সঙ্গে এই ঘটনাটি ঘটেছে, তাঁরা ওই এলাকারই গোল্লা সম্প্রদায়ের মানুষ। এই সম্প্রদায় আজও ঋতুমতী মহিলাদের অপবিত্র বলে মনে করে। পুলিশ জানিয়েছে, বহু সচেতনতামূলক শিবিরের আয়োজন করে এঁদের শিক্ষিত করার চেষ্টা করেও সফল হয়নি প্রশাসন। এখনও প্রায়ই ঋতুচলাকালীন মহিলাদের একঘরে করে দেওয়া হয় কর্নাটকের এই তালুকে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর এই ঘটনাটি ঘটে গুব্বি তালুকের চিকনেট্টাগুন্টে গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, যে তিন মহিলাকে ঋতুচলাকালীন গ্রামের বাইরে বার করে দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে দু’জন কর্মরতা। এক জন অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী। অন্য জন কাজ করেন স্কুলের মিড-ডে মিল কর্মী হিসাবে। স্থানীয় সূত্রে খবরটি পৌঁছয় গুব্বি তালুকের তহসিলদারের কাছে। পুলিশ এসে গ্রামবাসীদের নিরস্ত করে উদ্ধার করে তিন জনকেই।
পুলিশ সূ্ত্রে খবর, এর আগেও এমন ঘটনা বহু বার ঘটেছে এই গ্রামে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে প্রতি সপ্তাহে এক বা একাধিক বার পুলিশকর্মীরা হঠাৎ পরিদর্শন করেন গ্রামটিতে। কিন্তু তার পরেও অঘটন ঘটে। সম্প্রতিই এক কোলের শিশু এবং মাকে এ ভাবে গ্রামের বাইরে রেখে দিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। প্রচণ্ড ঠান্ডায় সদ্যোজাত শিশুটি মারা যায়। গত ২৬ জুলাই এই তালুকেই ঘটেছিল সেই মর্মান্তিক ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিশু এবং মাকে গ্রামের বাইরে রাখা হয়েছিল পবিত্র করার জন্য। কর্নাটকের এই গ্রামে অন্তঃসত্ত্বাদেরও অপবিত্র বলে গণ্য করা হয়। সন্তান হওয়ার এক মাস পরে পবিত্র করার পুজো করিয়ে তবেই গ্রামে প্রবেশের অনুমতি পান তাঁরা।