মহারাষ্ট্রে ধসের পর চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: রয়টার্স।
মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলায় পাহাড়ি ধসে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। কাদামাটিতে ১২ ঘণ্টা পরেও আটকে বহু মানুষ। ১০০ জনের বেশি ধ্বংসস্তূপে আটকে রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। তাঁদের উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে রায়গড়ের খালাপুর তহসিলের ইরশালওয়াড়ি গ্রামে আচমকা ধস নামে। পাহাড়ের উপর বেশ কয়েকটি বাড়ি ধসে যায়। মাটিতে বসে যায় কিছু কিছু বাড়ি। ওই এলাকার মোট ৪৮টি পরিবার এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাহাড়ের উপরে যেখানে মূল ধস নেমেছে, সেখানে উদ্ধারকারীরা পৌঁছতেই পারেননি। তার জন্য বিশেষজ্ঞ পর্বতারোহীদের ডেকে পাঠানো হয়েছে।
ধসের কেন্দ্রস্থল থেকে এখনও পর্যন্ত ১২টি দেহ উদ্ধার করা গিয়েছে। পাশাপাশি, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে উদ্ধারকারী দলের এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে মৃতদের পরিবারের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সেই সঙ্গে যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার খরচও বহন করবে সরকার।
বৃহস্পতিবারের ধসে ইরশালওয়াড়ি গ্রামের ৪৬টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে ২০টি বাড়ি ধসের কারণে কাদামাটিতে বসে গিয়েছে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, যে সময়ের ঘটনা, তখন গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সেই কারণে, নিজেদের বাঁচানোর সুযোগটুকুও অনেকে পাননি। গ্রামের কয়েক জন শিশু এবং কিশোর মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাওয়ার জন্য দূরে গিয়েছিল। তারাই পাহাড়ের উপরে এই ধস প্রথম দেখতে পায় এবং বাকিদের খবর দেয়।
ঘটনাস্থলে রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একাধিক দল উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। তবে বৃষ্টি এবং কম আলোর কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডণবীস জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে ৭৫ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে পাঠানো গিয়েছে।
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণেই এই ধস। বর্ষায় মাটি নরম হয়ে গিয়ে ধসে পড়েছে। পাহাড়ের উপর অবস্থিত গ্রামের বাড়িগুলি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে। সেই বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থাতেই দুর্যোগের কবলে পড়েছেন অনেকে। মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা।