রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। —ফাইল চিত্র।
মানুষের আকাঙ্ক্ষা ঊর্ধ্বমুখী এবং তা পূরণের লক্ষ্যে নরেন্দ্র মোদী সরকারের উপরে তৃতীয় বার ভরসা রেখেছেন দেশবাসী— আজ অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম যৌথ অধিবশনে মোদী সরকারের প্রত্যাবর্তনকে এ ভাবেই ব্যাখ্যা করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
আজ সরকারের ‘সাফল্যের’ কাহিনি নিয়ে রাষ্ট্রপতি সরব হলেও, তাতে উল্লেখ ছিল না মণিপুরের। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে গোষ্ঠী সংঘর্ষে জ্বলছে মণিপুর। মারা গিয়েছেন বহু। উৎপীড়নের শিকার অসংখ্য মহিলা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ গত দশ বছরে উত্তর-পূর্ব ভারতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হওয়া, অসমে শিল্প বিনিয়োগের কথা রাষ্ট্রপতি তুলে ধরলেও, একটি বারের জন্য স্থান পায়নি মণিপুর। তা দেখে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের মধ্যেই মণিপুর-মণিপুর বলে স্লোগান তোলেন বিরোধীরা। কেন মণিপুরের সমস্যাকে উপেক্ষা করা হল তা নিয়ে লোকসভার বাইরে সরব হন তাঁরা।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের মতে, ‘‘দেশের পাঁচটি বড় সমস্যা হল মূল্যবৃদ্ধি, মণিপুরে সংঘর্ষ, রেল দুর্ঘটনা, জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ, বিজেপি শাসিত রাজ্যে দলিত, জনজাতি ও সংখ্যালঘু সমাজের উপরে হামলা। অথচ মোদী সরকারের লিখে দেওয়া রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে ওই পাঁচটির সমস্যার একটিরও উল্লেখ নেই।’’
আজ রাষ্ট্রপতি দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণে মজবুত সরকার গড়ার উপরে জোর দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ছয় দশক পরে বিশ্বের মানুষ সাক্ষী থাকল যে ভারতবাসী টানা তৃতীয় বার একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারকে ফিরিয়ে এনেছে।’’ রাষ্ট্রপতি বর্তমান সরকারকে সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে শংসাপত্র দিলেও, বিরোধীরা তা মানতে নারাজ। বিহারের সিপিআই (এমএল) সাংসদ সুদামা প্রসাদ বলেন, ‘‘এ বারের সরকার জোট সরকার। কিন্তু বিজেপি এমন ভাবে বিষয়টি তুলে ধরছে যাতে মনে হচ্ছে একার ক্ষমতায় সরকার গড়েছে তারা।’’ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘শরিক দল সরে গেলেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে সরকার।’’
আজ রাষ্ট্রপতি দাবি করেন, আগামী অধিবেশনে মোদী সরকার দূরদর্শী, ভবিষ্যতমুখী বাজেট পেশ করতে চলেছেন। যা সংস্কারের গতিকে বাড়াবে, যাতে দেশবাসীর আকাঙ্ক্ষা মেটানো সম্ভব হয়। তাঁর কথায়, ‘‘গত দশ বছরে ভারতের অর্থনীতি একাদশতম স্থান থেকে পঞ্চমে উঠে এসেছে। পরবর্তী ধাপে সরকারের লক্ষ্য, ভারতীয় অর্থনীতিকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করা।’’ এসপি সাংসদ অখিলেশ যাদবের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘এতে কি কৃষকেরা সম্পন্ন হয়েছেন? কেন কোটি কোটি যুবক বেকার? কেনই বা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না?’’