গত ৩ মে থেকে মণিপুরে শুরু হিংসার, সে দিন থেকেই বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবাও। — ফাইল ছবি।
মণিপুরের এন বীরেন সিংহ সরকারকে রাজ্যে আংশিক ভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা ফেরাতে বলল মণিপুর হাই কোর্ট। প্রাথমিক ভাবে কেবলমাত্র ‘লিজ় লাইন’ এবং বাছাই করা ঘরোয়া সংযোগ ফেরাতে হবে। তবে প্রশাসনকে খেয়াল রাখতে হবে, ইন্টারনেট সংযোগ যেন হিংসা ছড়ানোর কাজে কেউ ব্যবহার করতে না পারে।
গত দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে ইন্টারনেট সংযোগ নেই মণিপুরে। এর ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বহু মানুষকে। গোটা রাজ্যে কার্যত বন্ধ ব্যাঙ্কিং পরিষেবা। হাতে নগদ টাকার অভাবের পাশাপাশি এত দিন যে বিল ইন্টারনেট ব্যবহার করে সহজেই মিটিয়ে দেওয়া যেত, এ বার তা দিতেও প্রবল সমস্যায় মানুষ। স্কুল, কলেজের বেতন মেটাতেও সমস্যায় পড়ছেন মা, বাবারা। থমকে রয়েছে ইন্টারনেট নির্ভর সমস্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজও। সমস্যার কথা জানিয়ে মণিপুরের বাসিন্দাদের একাংশ হাই কোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। তার পরেই গত ২০ জুন আদালত প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়, যাতে নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় সীমিত গতির ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা হয়। তার পরেই এল হাই কোর্টের সাম্প্রতিকতম নির্দেশ।
শনিবার হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, লিজ় লাইন অর্থাৎ, যে ধরনের ইন্টারনেট পরিষেবা সরকারি সংস্থায় দেওয়া হয় তা যেন চালু করে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি বাছাই করা কিছু বাড়িতেও ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করবে সরকার। সেই বাড়িগুলি হল অপটিক ফাইবার তারের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ ছিল এমন। সে ক্ষেত্রে প্রশাসনকে বাছাই করা কয়েকটি বাড়িতে সমীক্ষা করতে হবে। তার পর সংযোগ চালু হবে। তবে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট পরিষেবা আগের মতোই বন্ধ থাকছে। মণিপুর সরকারের তরফের আইনজীবী আদালতকে জানান, খুব দ্রুত এ ব্যাপারে ট্রায়াল চালু করবে প্রশাসন। ১৫ দিনের মধ্যে আদালতকে এ ব্যাপারে রিপোর্ট দিতে হবে।
গত ৩ মে গোলমাল শুরু হওয়ার পর থেকেই ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ মণিপুরে। তা নিয়ে হাই কোর্টে মামলার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টেও মামলা হয়েছিল। কিন্তু যে হেতু হাই কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলা চলছে, তাই সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলা খারিজ করে দেয়। এ বার হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, আংশিক ভাবে মণিপুরে ফেরানো যেতে পারে ইন্টারনেট সংযোগ। এতে সন্ত্রাস বিধ্বস্ত রাজ্যবাসী একটু হলেও স্বস্তি পাবেন।