পা ভাঙা ধর্ষিতা মেয়েকে পিঠে চাপিয়ে হাসপাতালের পথে বাবা। উত্তরপ্রদেশের এটায়। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
না, একটাও স্ট্রেচার ছিল না হাসপাতালে। ছিল না একটাও হুইলচেয়ার। পা ভাঙা ধর্ষিতা মেয়েকে পিঠে চাপিয়েই মহিলাদের হাসপাতালে ঢুকতে হল বাবাকে। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন সেখানকার এক্স-রে যন্ত্র বিগড়ে গিয়েছে। তখন মেয়েকে নিয়ে বাবাকে ছুটতে হয় আলিগড় হাসপাতালে।
কল্পকাহিনী নয়। এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের এটার একটি সরকারি হাসপাতালে। মঙ্গলবার। ১৫ বছর বয়সী ধর্ষিতা মেয়েকে পিঠে চাপিয়ে বাবার হাসপাতালে ঢোকার ভিডিয়ো তুলেছিলেন অন্য কোনও রোগীর আত্মীয়স্বজন। সেই ছবি পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সমালোচনায় সরব হয়েছে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম।
অভিযোগ, ১৫ বছরের কিশোরীকে এক প্রতিবেশীর ১৯ বছর বয়সী ছেলে একটি ঘরে টেনে নিয়ে যায়। পরে ঘর বন্ধ করে দিয়ে বহু ক্ষণ ধরে ধর্ষণ করা হয় কিশোরীকে। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে কিশোরী ঘরের দরজা খুলে পালানোর চেষ্টা করলে, প্রচণ্ড মারধর করে তার পা ভেঙে দেওয়া হয়।
মারহেরা থানার স্টেশন হাউস অফিসার জিতেন্দ্র ভাদৌরিয়া বলেছেন, ‘‘কিশোরীর অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৪ ডিসেম্বর একটি এফআইআর হয়েছে। অভিযুক্ত অঙ্কিত যাদবকে পরের দিন গ্রেফতারও করে জেলে পাঠানো হয়েছে। কিশোরীকে পাঠানো হয়েছে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য।’’
তবে এই গাফিলতির ঘটনা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তো বটেই প্রশাসনিক স্তরেও কেউ দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। এটা জেলার চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডা. অজয় অগ্রবাল বলেছেন, ‘‘হাসপাতালে কোনও স্ট্রেচার বা হুইলচেয়ার নেই, আমার জানা ছিল না। খবরটা পেয়ে আমি ওই হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা এক অফিসারকে স্ট্রেচার বা হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করে দিতে বলেছিলাম।’’
যিনি হাসপাতালের দায়িত্বে ছিলেন সেই ডিপিও (ডিস্ট্রিক্ট প্রোবেশন অফিসার) আবদুল কালাম অবশ্য অগ্রবালের বক্তব্য মানতে রাজি হননি। তাঁর কথায়, ‘‘হাসপাতালটির আদত দায়িত্ব জেলার পরিবার কল্যাণ অফিসার রেশমি যাদবের। এ ব্যাপারে যা বলার তিনিই বলতে পারবেন।’’রেশমি যাদব অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁকে ‘এখনও সরকারি ভাবে ওই হাসপাতালের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।’