মমতা জানালেন, সাকেতের গ্রেফতারি আসলে ‘প্রতিহিংসামূলক’ পদক্ষেপ। — ফাইল ছবি।
তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলের গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টিকে ধিক্কার জানালেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “এ সবই আসলে ‘প্রতিহিংসামূলক’ পদক্ষেপ। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে টুইট করেছিলেন বলেই গ্রেফতার করা হয়েছে সাকেতকে।” রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে পাল্টা তোপ দেগে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানান, গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে বলে যা খুশি করা যায় না। প্রতিহিংসার রাজনীতি কী, তার বড় নিদর্শন রয়েছে এই রাজ্যে।
মঙ্গলবার অজমের শরিফে প্রার্থনা করেন মমতা। তার পরেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাকেতের গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘খুব খারাপ এবং দুঃখের খবর। সাকেত খুবই ঝকঝকে এক জন মানুষ। সমাজমাধ্যমে তিনি খুবই জনপ্রিয়। তিনি কোনও ভুল করেনি।’’ তিনি এ-ও জানান যে, গোখলে অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে মাঝরাতে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। তাঁর কথায়, ‘‘সাকেতের কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল। অসুস্থ ছিলেন। অনেক কষ্টে প্রাণ বাঁচানো হয়েছে। সোমবার জয়পুরে আসছিলেন। রাত ২টোর সময় গুজরাতের পুলিশ আমদাবাদে নিয়ে গিয়েছে। কেন না, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একটা টুইট করেছিলেন।’’
এই বিষয়ে নিজের প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন মমতা। জানিয়েছেন, এর আগে তাঁর বিরুদ্ধেও টুইট হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বিরুদ্ধে তো কত টুইট হয়। সাইবার অপরাধের বিষয়টি অবশ্যই দেখা উচিত। যেখানে দেশের বিপদ হতে পারে, ব্যক্তিগত আক্রমণ হয়, এমন টুইট করা উচিত নয়। কিন্তু মোরবী সেতু ভেঙে পড়ে গিয়েছে, এটা তো বড় কাণ্ড। এই নিয়েই টুইট করেছিলেন। আমরা এর জন্য দুঃখিত। এই প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপকে ধিক্কার জানাই।’’
মমতার এই আক্রমণ প্রসঙ্গে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন শমীকও। দাবি করেছেন, সাকেতকে গ্রেফতার করে কোনও ভুল করা হয়নি। কলকাতা পুলিশও এই জায়গায় থাকলে একই কাজ করত। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী গড়িয়াহাট থেকে ২৫ লক্ষ টাকার শাড়ি কিনেছেন এবং সেই শাড়ির বিল মিটিয়েছে রাজ্য সরকার। আমি যদি লিখি, তা হলে কলকাতা পুলিশ কী করবে? অবিলম্বে গ্রেফতার করবে। এবং তা করাই উচিত। এটাই সরকারের কাজ।’’
প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষের জন্য একহাত নিতেও ছাড়েননি শমীক। তাঁর কথায়, ‘‘দেশের প্রধানমন্ত্রী সেতু ভেঙে যাওয়ার পর সেখানে গিয়েছেন। সেই প্রধানমন্ত্রীর নামে প্রচার করা হচ্ছে।’’ এর পর ফের রাজ্য সরকারকে একহাত নেন শমীক। বলেন, ‘‘প্রতিহিংসার কথা কারা বলছেন? কারা বলছেন ব্যাড অ্যান্ড স্যাড? এই রাজ্যে একটা কার্টুন এঁকে জেলে যেতে হয়েছিল অম্বিকেশ মহাপাত্রকে। একটা প্রান্তিক পরিবারের ছেলে যখন সারের দাম কেন বেড়েছে জিজ্ঞেস করেছিল, তাঁকে মাওবাদী বলে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিহিংসার রাজনীতি কী এবং তা কী হতে পারে, তার বড় নিদর্শন এই রাজ্য।’’
মঙ্গলবার রাত দু’টোর সময় বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার হন সাকেত। সে খবর পরে টুইটারে জানান তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর অভিযোগ, গুজরাতের মোরবী সেতু ভেঙে পড়া নিয়ে টুইট করেছিলেন বলেই গ্রেফতার সাকেত। এ বার এই নিয়ে সরব মমতাও।