ছবি: এএফপি।
করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ে বেসামাল দিল্লির সঙ্গে মুম্বইয়ের বিমান ও রেল যোগাযোগ বন্ধের কথা ভাবছে মহারাষ্ট্র প্রশাসন। সরকারি একটি সূত্রে এমন দাবি করা হলেও মহারাষ্ট্রের মুখ্যসচিব সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন, এই বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লিতে যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, তার প্রেক্ষিতে আমাদেরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এই মুহূর্তে দিল্লি ও মুম্বইয়ের মধ্যে খুব সীমিত সংখ্যক ট্রেন ও বিমান চলছে। তার সংখ্যা কমানো বা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত যথাসময়ে নেওয়া হবে।’’
দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসেবে আজ ৯০ লক্ষ পেরিয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে নজরদারি ও সহায়তার জন্য গত কালই হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাত ও মণিপুরে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে কেন্দ্র। সূত্রের বক্তব্য, অন্য যে রাজ্যগুলিতে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে, সেখানেও কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর কথা ভেবে দেখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজস্থান ছাড়াও সব চেয়ে বেশি রোগী বেড়েছে দিল্লি, কেরল, মহারাষ্ট্র ও পশ্চিমবঙ্গে। ফলে এই রাজ্যগুলিতেও কেন্দ্রীয় দলের সফরের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট মহল। পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো ও আক্রান্তদের দ্রুত চিহ্নিত করার বিষয়টি কেন্দ্রের তরফে আরও এক বার রাজ্যগুলিকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন জানিয়েছেন, আজ থেকে কন্টেনমেন্ট এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা মানুষদের চিহ্নিত করা অর্থাৎ ‘কনট্যাক্ট ট্রেসিং’-এর কাজও জোরকদমে চলছে। গত কাল দিল্লিতে ৭৫৪৬ জন নতুন করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে। মৃত্যু হয়েছে ৯৮ জনের। দিল্লিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫.১০ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। দিল্লি থেকে হরিয়ানায় ঢুকতে হলে রাজ্যের সীমানায় করোনা পরীক্ষা করাতে হচ্ছে আমজনতাকে।
গুজরাতের আমদাবাদে আজ থেকে সোমবার পর্যন্ত কার্ফু শুরু হয়েছে। এর পরেও ওই রাজ্যের রাজকোট, সুরাত এবং বডোদরাতে রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত নৈশ কার্ফুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে উপমুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেল জানিয়েছেন। মধ্যপ্রদেশের ইনদওর, ভোপাল, গ্বালিয়র, বিদিশা ও রতলামে আগামিকাল থেকে নৈশ কার্ফু চালু হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান জানান, শুধুমাত্র কারখানার শ্রমিক এবং জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এ থেকে ছাড় পাবেন। এই কার্ফু চলবে রাত ১০টা থেকে পরের দিন ভোর ৬টা পর্যন্ত। মুম্বইয়ে পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলি ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। হরিয়ানায় ২ নভেম্বর থেকে স্কুল চালু হয়েছিল। কিন্তু গত ১৫ দিনে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ১০৭ জন শিক্ষক এবং ১৭৪ জন পড়ুয়া। ফলে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেই রাজ্যে।