শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। —ফাইল চিত্র
রবিবার এনডিএ-র বৈঠকে থাকছে না মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস ও এনসিপি-র হাত ধরে সরকার গড়া প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলা শিবসেনা। এই খবর জানিয়ে সেনা-সাংসদ সঞ্জয় রাউত শনিবার দাবি করেছেন, ‘‘বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বেরিয়ে আসাটাই কেবল বাকি রইল।’’ একটি ইঙ্গিতবাহী টুইটবার্তায় এ দিন বিজেপির শরিক হিসাবে কাটানো দিনগুলিকে ‘যন্ত্রণাদায়ক’ বলেও বর্ণনা করেছেন রাউত।
রবিরার দিল্লিতে এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার ও কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর বৈঠকে শিবসেনার সঙ্গে মিলে সরকার গড়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করার কথা ছিল। এর পরে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেকে পাশে নিয়ে তাঁরা সেই কথা ঘোষণা করবেন, এখনও এমনই ঠিক রয়েছে। কিন্তু পওয়ার রবিবারে দলের কোর কমিটির বৈঠক ডাকায় সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক এক দিন পিছোতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। কংগ্রেস ও এনসিপি-র নেতারা মনে করছেন, কোর কমিটির বৈঠক সেরে দিল্লি পৌঁছে সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসে উঠতে পারবেন না বর্ষীয়ান পওয়ার। তবে তাতে সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়বে না বলেই নেতাদের দাবি।
কালই আবার শরিকদের বৈঠকে ডেকেছে বিজেপি। বিজেপির সঙ্গে শিবসেনার অম্ল-মধুর সম্পর্ক কয়েক বছর ধরেই চলছে। কিন্তু এনডিএ ছেড়ে যাওয়ার কথা সে ভাবে আগে বলেনি উদ্ধবের দল। সেনা-নেতৃত্ব বলে এসেছেন, এনডিএ-র মালিকানা বিজেপির নয়। শিবসেনা ও অকালি দলও গোড়া থেকে এই জোটে রয়েছে। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত এ দিনও সেই কথাই বলেছেন। তবে জানিয়েছেন, ‘‘মহারাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের
পরিপ্রেক্ষিতে রবিবারের বৈঠকে না-যাওয়ার সিদ্ধান্তই নিয়েছি আমরা। এনডিএ সরকার থেকে আমাদের মন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছেন। এর পরে এই জোট থেকে বেরিয়ে আসাটা কেবল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।’’ দলের আর এক সাংসদ অবশ্য দাবি করেছেন, রবিবার বালাসাহেব ঠাকরের মৃত্যুদিন হওয়ায় সে দিন শিবসেনার নানা কর্মসূচি থাকে। সেই কারণেই এনডিএ-র বৈঠকে যাবেন না সেনা নেতৃত্ব। জোট নিয়ে ধারাবাহিক বৈঠকের ফলে এ দিন রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারির সঙ্গে তিন দলের নেতাদের একটি বৈঠক স্থগিত করে দিতে হয়েছে। রাজ্যে কৃষকদের সমস্যা নিয়ে এই বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল।
তবে সরকার গড়ার বোঝাপড়া মসৃণ ভাবে এগোচ্ছে বলে দাবি করছেন শিবসেনা, কংগ্রেস ও এনসিপি নেতৃত্ব। রাউত এ দিন জানান, নতুন সরকারের ন্যূনতম সাধারণ কর্মসূচি নিয়ে বোঝাপড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এর পরে অন্য বিষয়গুলি নিয়ে কথাবার্তা চলছে। সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভায় মুখ্যমন্ত্রী শিবসেনার এবং বাকি দুই দলের দুই উপমুখ্যমন্ত্রী থাকবে, এমন সিদ্ধান্ত এক রকম চূড়ান্ত। শরদের ভাইপো অজিত পওয়ারকে উপমুখ্যমন্ত্রীও বেছে ফেলেছে এনসিপি। কংগ্রেস নবীন কাউকে এই পদে এনে চমক দেওয়ার কথা ভাবছে। মন্ত্রিসভায় শিবসেনার ১৬, এনসিপি-র ১৪ এবং কংগ্রেসের ১২ জন সদস্য থাকার বিষয়টিতেও ঐকমত্য হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এমন পরিস্থিতিতে শিবসেনার নেতা রাউত টুইট করে বলেছেন, ‘‘বন্ধুরা, নতুন সুন্দর মরসুম এসেছে, পুরনো যন্ত্রণার দিনগুলি আর মনে রাখতে চাই না।’’
এর মধ্যেই মুম্বইয়ের মেয়র নির্বাচন ২২ তারিখে। বিজেপির সঙ্গে বিচ্ছেদের প্রভাব সেই নির্বাচনে পড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। বিজেপির সমর্থনে এত দিন এই পদে ছিলেন শিবসেনার বিশ্বনাথ মহাদেশ্বর।