করোনার আঁচ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না প্রায় কেউই। দেশের প্রতিটি জেলায়, গ্রামে-গঞ্জে ঢুকে পড়েছে এই সংক্রমণ।
এত কিছুর মধ্যেও এই অতিমারি থেকে সততই দূরত্ব বজায় রেখেছে একটি ছোট গ্রাম! করোনা নাকি এখনও ঢুকতেই পারেনি সেখানে।
গ্রামের নাম চিখালার। মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলার অন্তর্গত এই গ্রাম। সারা দেশে যখন লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা, লাগাম টানা যাচ্ছে না মৃতের সংখ্যাতে, সেই অবস্থায় দাঁড়িয়ে সারা বিশ্বের কাছে নজির তৈরি করেছে এই গ্রাম।
কী ভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলল চিখালার?
২০০৯ সালের হিসাব অনুযায়ী, মোট ৮৭টি পরিবারের বাস এই গ্রামে। জনসংখ্যা ৪৭৬। গ্রামে মহিলা এবং পুরুষের অনুপাত প্রায় সমান। ২৪০ জন মহিলা এবং পুরুষ ২৩৬ জন।
মূলত এই গ্রামের মহিলা বাহিনীর তৎপরতাতেই এমনটা হওয়া সম্ভব হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ আটকাতে কোনও বহিরাগতকে এই গ্রামে ঢুকতে দেন না তাঁরা। নিজেরাও সচরাচর গ্রাম ছেড়ে বার হন না।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য গ্রামের মহিলারা দু’জন যুবককে নিয়োগ করেছেন। ওই দু’জনই প্রয়োজন জেনে নিয়ে গ্রামের বাইরে গিয়ে সেগুলিকে নিয়ে আসেন এবং বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন।
বেতুলের এই গ্রামে প্রবেশের মূল রাস্তা বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন মহিলারা।
গ্রামের মহিলারা নিজেদের মধ্যেই দিনের ২৪ ঘণ্টা সময় ভাগ করে নিয়েছেন পাহারা দেওয়ার জন্য। রীতিমতো লাঠি হাতে পাহাড়া দেন তাঁরা।
বিনা প্রয়োজনে কাউকে রাস্তায় ঘুরতে দেখলে প্রয়োজনে লাঠির ঘায়ে রাস্তা ফাঁকা করতেও পিছপা হন না তাঁরা।
দেশে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে ৩ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। দৈনিক কোভিড আক্রান্তের সংখ্যাও প্রায় ৪ লক্ষ।
অথচ এই অতিমারি পরিস্থিতিতেও এই গ্রামকে এখনও ছুঁতে পারেনি কোভিড ১৯।
এত দিন চিখালার কুখ্যাত ছিল দেশি মদের জন্য। বাড়ি বাড়ি বেআইনি দেশি মদ তৈরি করেই মূলত দিনযাপন করতেন গ্রামবাসীরা। মহিলাদের এই উদ্যোগ সারা দেশের কাছে উদাহরণ হয়ে উঠেছে এই গ্রাম।