(বাঁ দিকে) আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং বিআরএস নেত্রী কে কবিতা। — ফাইল চিত্র।
দিল্লির আবগারি মামলায় ১০০ কোটি লেনদেনের অভিযোগ তুলেছিল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ ছিল, সুবিধা পাওয়ার বিনিময়ে ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-র নেত্রী কে কবিতা আপ নেতাদের ১০০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন! এ বার সেই সূত্র ধরেই আর এক কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই শুক্রবার আদালতে দাবি করেছে, দক্ষিণের এক মদ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা নেওয়ার ব্যাপারে কবিতার সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে।
আবগারি মামলায় তেলঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-এর কন্যা কবিতাকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। আদালতের নির্দেশে তিহাড় জেলে ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সেই মামলা তদন্তে তিহাড়ে গিয়ে চন্দ্রশেখর-কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। তার পর জেলের ভিতর থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে তদন্তকারী সংস্থা।
শুক্রবার কবিতাকে আদালতে হাজির করায় সিবিআই। নিজেদের হেফাজতে তাঁকে নেওয়ার জন্য আবেদন জানায় তারা। আদালতে সিবিআই দাবি করে, ‘‘২০২২ সালের ১৬ মার্চ দক্ষিণ ভারতের এক মদ ব্যবসায়ী দিল্লিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে গিয়ে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সঙ্গে দেখা করেন। ব্যবসা করার জন্য কেজরীওয়ালের সহায়তা চান ওই ব্যবসায়ী। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন। পাশাপাশি এই বিষয়ে আলোচনা করার জন্য কবিতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছিলেন। এমনকি, সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য টাকাও চাওয়া হয়েছিল।’’
এর পরই সিবিআই দাবি করে, ‘‘তেলঙ্গানার বিআরএস নেত্রী কবিতা ওই মদ ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁকে হায়দরাবাদে দেখা করতে বলা হয়েছিল। কবিতার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ওই ব্যবসায়ী কেজরীর কথা উল্লেখ করেছিলেন। এমনকি, বিজয় নায়ারের কথাও জানান।’’ প্রসঙ্গত, আবগারি মামলায় বিজয়কে গ্রেফতার করেছিল ইডি।
আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিযোগ করেছে, ‘‘ওই ব্যবসায়ীকে কবিতা বলেছিলেন ‘আমাদের ১০০ কোটি দিতে হবে।’ তা-ই তাঁকে ৫০ কোটি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিআরএস নেত্রী।’’ সওয়াল-জবাব শেষে আদালত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ১৫ মার্চ দুপুরে কবিতার হায়দরাবাদের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। চলে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ। তার পর বিকেলে বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। ইডির গ্রেফতারি ‘বেআইনি’ বলে দাবি করেন কবিতা। গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন তিনি। তবে শীর্ষ আদালত তাঁর আবেদনে সাড়া দেয়নি। এর পর নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন কবিতা। কিন্তু দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত তাঁর অন্তর্বর্তী জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। গত মঙ্গলবার কবিতাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। তার মাঝেই আবার তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই।