মল্লিকার্জুন খড়্গের বৈঠক। ছবি পিটিআই।
মল্লিকার্জুন খড়্গের ‘ডাকে’ সাড়া দিল না তৃণমূল। বুধবার কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি তাঁর দিল্লির ১০ রাজাজি মার্গের বাংলোয় বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রত্যেক শরিক দলের লোকসভা এবং রাজ্যসভার নেতাকে নৈশভোজ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু ১৭টি বিরোধী দলের সংসদীয় প্রতিনিধিরা হাজির থাকলেও ব্যতিক্রম হল তৃণমূল। দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এমনকি, তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসাবে কোনও সাংসদও খড়্গের বাংলোয় যাননি। ওই বৈঠকে ছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
তৃণমূলের পাশাপাশি উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা (ইউবিটি)-র কোনও সাংসদকেও বুধবার রাতে খড়্গের বাংলোয় দেখা যায়নি। নৈশভোজ বৈঠকের একটি ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে খড়্গে লিখেছেন, ‘‘সরকারের জবাবদিহির দাবিতে এই অধিবেশনের পরবর্তী পর্বে আমরা জনগণের সমস্যা সংসদে তুলে ধরব। সব দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে শীঘ্রই ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকের তারিখ স্থির করা হবে। জুড়েগা ভারত, জিতেগা ইন্ডিয়া!’’
হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের আঁচ মিলতেই গত রবিবার (৩ ডিসেম্বর) তড়িঘড়ি লোকসভা নির্বাচনের রণনীতি ঠিক করতে ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদের নিয়ে বৈঠকে সক্রিয় হয়েছিল কংগ্রেস। ৬ ডিসেম্বর বৈঠক করার জন্য শরিক নেতৃত্বকে বার্তা দিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি খড়্গে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, ওই বৈঠকে তিনি হাজির থাকতে পারবেন না। উত্তরবঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। সূত্রের খবর, একই কারণে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে হাজির থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং সপা-র প্রধান অখিলেশ যাদব এমনকি, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেনও কংগ্রেসের ডাকা ওই বৈঠকে থাকতে পারবেন না বলে খড়্গেকে জানিয়ে দেন বলে সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক ডেকেও তা বাতিল করতে হয় কংগ্রেসকে। পরিবর্তে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে জোটের রণকৌশল নিয়ে আলোচনার জন্য ‘ইন্ডিয়া’র বিভিন্ন শরিকদলের লোকসভা এবং রাজ্যসভার নেতাদের নৈশভোজ বৈঠকে ডেকেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার নেতা খড়্গে।
‘ইন্ডিয়া’র একটি সূত্র জানাচ্ছে, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের ‘একলা চলো’ ভূমিকায় মমতা, অখিলেশ, নীতীশ, অরবিন্দ কেজরীওয়ালরা ক্ষুব্ধ। বস্তুত, ইতিমধ্যে মমতা, অখিলেশ সে কথা প্রকাশ্যেও জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ জানিয়েছেন, আগামী ১৭ ডিসেম্বর বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র পরবর্তী বৈঠক হবে। টানাপড়েনের এই আবহে তৃণমূল সেই বৈঠকে যোগ দেয় কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যেই।