—ফাইল চিত্র
পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর অন্তত তিনটি জায়গা থেকে সেনা প্রত্যাহার করছে ভারত ও চিন। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। নয়াদিল্লির মতে, উত্তেজনার পারদ নামিয়ে আনতে এবং পরস্পরিক আস্থা বাড়াতে দু’দেশেরই আরও বেশি করে সেনা প্রত্যাহার করা উচিত। চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকে মূলত এই বিষয়টিতেই জোর দিচ্ছে ভারতীয় সেনা। সংবাদ সংস্থা সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। বুধবার থেকে ভারত ও চিনের সেনার মধ্যে বৈঠক শুরু হয়েছে। তা চলবে ১০ দিন ধরে।
সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে উত্তেজনার পারদ এখন নামছে। গলওয়ান উপত্যকা-সহ একাধিক এলাকা থেকে নিজেদের বাহিনী কয়েক কিলোমিটার সরিয়ে নিয়েছে দু’পক্ষই। এই আবহে বুধবার থেকে দু’দেশের সেনাশিবিরের মধ্যে শুরু হচ্ছে নানা পর্যায়ের বৈঠক। ব্যাটালিয়ন ব্রিগেড ও মেজর জেনারেল স্তরের বৈঠক হতে চলেছে ভারত ও চিনের মধ্যে। সেই বৈঠকে দু’দেশেরই বাহিনী সরানোর বিষয়টিকেই পাখির চোখ করছে ভারতীয় সেনা। তাদের মতে, বেজিং যদি এলএসি থেকে ১০ হাজারের বেশি সেনা সরিয়ে নেয় তবেই দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানো সম্ভব হবে। শুধু তাই নয়, সেনা ছাড়াও সীমান্তবর্তী এলাকায় কামান ও ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে চিন। তাও সরিয়ে নেওয়ার দাবিও ওই বৈঠকে তুলতে চলেছে ভারতীয় সেনা।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানাচ্ছে, এক সরকারি সূত্র মতে, পূর্ব লাদাখে সেনা সরাতে শুরু করেছে দু’পক্ষই। কিন্তু ভারত চায়, এলএসি বরাবর বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন করা ১০ হাজারের বেশি সেনা সরিয়ে নিক চিন। ওই এলাকাগুলিতে ভারী গোলাবর্ষণের জন্য উপযুক্ত কামান, ট্যাঙ্ক ও ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকলও সাজিয়ে রাখা হয়েছে। তা-ও সরানোর দাবি তুলতে চলেছে নয়াদিল্লি। সীমান্তে বিপুল সংখ্যক সেনা জমায়েত করে চাপ বাড়ানো। চিনের এই কৌশলের উপর নজর রেখে এলএসি বরাবর ১০ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করে ভারতও।
আরও পড়ুন: ‘নয়া পাকিস্তান’ দূর অস্ত! রাশ আলগা হচ্ছে ইমরানের, পাকিস্তানে বাড়ছে সেনা আধিপত্য?
তবে শুধু সেনা, কামান বা ট্যাঙ্কই নয়, সীমান্তবর্তী বিমানঘাঁটিতে ফাইটার জেট পর্যন্ত মোতায়েন করেছে চিন। তিব্বতের গারি গুনশা বিমানঘাঁটিতে বোমারু বিমান থাকার ছবিও ধরা পড়েছে কৃত্রিম উপগ্রহের চোখে।
আরও পড়ুন: ‘হ্যাঁ, ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করেছে চিন’! অভিনব কৌশলে পাল্টা কংগ্রেসকেই বিঁধলেন লাদাখের সাংসদ
মে মাসের শুরুর দিকে উত্তর সিকিম থেকে পূর্ব লাদাখের মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গায় চিনা বাহিনীর বিরুদ্ধে এলএসি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। ওই এলাকায় ভারতীয় বাহিনী চিনকে বাধাও দেয়। ফলে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি বা মারামারির খবরও আসছিল। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয় গলওয়ান উপত্যকা, প্যাংগং তট-সহ একাধিক এলাকায় ভারত ও চিন মুখোমুখি সেনা সমাবেশ করায়। এর পরই উত্তেজনা কমাতে নয়াদিল্লি ও বেজিং দু’পক্ষ সক্রিয় হয়ে ওঠে। দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার পাশাপাশি ৬ জুন দুই বাহিনীর কোর কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠকও হয়।