গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালের দিন এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে নাশকতার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। নিষিদ্ধ খলিস্তানপন্থী সংগঠন শিখ ফর জাস্টিস (এসএফজে)-এর সেই নেতা গুরুপতবন্ত সিংহ পান্নুন এ বার আগামী ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে নয়াদিল্লিতে হামলার হুঁশিয়ারি দিলেন। এমনকি, সম্ভাব্য হামলাস্থল হিসাবে দিল্লির লালকেল্লা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার পান্নুন একটি ভিডিয়োবার্তা সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন (আনন্দবাজার অনলাইন তার সত্যতা যাচাই করেনি)। ‘হিংসা হিংসার জন্ম দেয়, ভারত কি পরিণতির মুখোমুখি হতে প্রস্তুত’ শিরোনামের ওই ভিডিয়ো বার্তায় জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন হবে ‘ডি ডে’ (বিজয় দিবস) এবং লালকেল্লা হবে ‘গ্রাউন্ড জ়িরো’ (সাধারণত বিস্ফোরণস্থল চিহ্নিত করতে এই পরিভাষা ব্যবহৃত হয়) হয়ে যেতে পারে! সম্প্রতি, আমেরিকার একটি রিপোর্টে পান্নুনের উপর প্রাণঘাতী হামলার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁর ওই প্রতিক্রিয়া।
এসএফজে নেতা বলেছেন, ‘‘স্বাধীন ও সার্বভৌম খলিস্তান রাষ্ট্রের জন্য আমরা গণভোট এবং ব্যালটের উপর ভরসা রাখছি। কিন্তু ভারত সরকার বুলেটের জোরে সেই গণভোট থামিয়ে দিতে চাইছে।’’ কানাডায় খলিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জর খুনের ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এসএফজে নেতা ভিডিয়োবার্তায় বলেন, ‘‘ভারত খালিস্তানপন্থী শিখদের খুন করতে গোপনে ভাড়াটে বাহিনী ব্যবহার করছে। তাই, আমি মোদী সরকারকে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সশস্ত্র লড়াইয়ে নামার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। ইতিহাস সাক্ষী যে শিখরা সমানে-সমানে লড়াই করবে। পঞ্জাবকে ভারতীয় দখল থেকে মুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে।’’
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সমাজমাধ্যমে এসেছিল পান্নুনের ভিডিয়ো-বার্তা (আনন্দবাজার অনলাইন যার সত্যতা যাচাই করেনি)। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘১৯শে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে চড়লে প্রাণের বিপদ আছে।’’ খলিস্তানি জঙ্গিরা যে জেনেশুনেই বিশ্বকাপ ফাইনালের দিনটি বাছতে চাইছে, সে কথা গোপন করেননি পান্নুন। কানাডায় আশ্রয় নেওয়া ওই খলিস্তানি নেতা গত সেপ্টেম্বরে সে দেশে বসবাসকারী হিন্দুদের উপর হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলন। এর পর তাঁর চণ্ডীগড়ের বাড়ি এবং অমৃতসরের জমি বাজেয়াপ্ত করেছিল এনআইএ। প্রসঙ্গত, পঞ্জাবে পান্নুনের বিরুদ্ধে ২২টি অপরাধের মামলা রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি দেশদ্রোহিতার। এসএফজের বিরুদ্ধে কানাডার পাশাপাশি, আমেরিকা এবং ব্রিটেনে ভারতীয় দূতাবাসে হামলার অভিযোগ রয়েছে। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কানাডার সমস্ত বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ান ঘিরে বিক্ষোভ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছে তারা।
২০১৯ সালের ১০ জুলাই এসএফজেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। জানায়, ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার জন্য বড়সড় হুঁশিয়ারি এই সংগঠন। ২০২০ সালে সংগঠনের নেতা পান্নুনকে জঙ্গি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তার পরেও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকারের মদতে সে দেশে বসে পান্নুন ধারাবাহিক ভাবে ভারত বিদ্বেষী প্রচার চালাচ্ছেন বলে নয়াদিল্লির অভিযোগ। খলিস্তানি ওই নেতা কানাডার পাশাপাশি আমেরিকারও নাগরিক। প্রসঙ্গত, বছর দু’য়েক আগে কৃষি বিল বিরোধী আন্দোলন পর্বে লালকেল্লায় খলিস্তানি পতাকা তোলার অভিযোগ উঠেছিল এসএফজে সমর্থকদের বিরুদ্ধে।