দেবেন্দ্র ফডণবীস। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক টানাপড়েনের কি ইতি ঘটবে বুধবারই? বিজেপি নেতৃত্ব বুধবার মুম্বইয়ে বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসছে। দিন দু’য়েক আগেই বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব মহারাষ্ট্রের জন্য দুই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছিলেন। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীকে মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অনেকের মতে, বুধবার এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পরই বিজেপি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করে ফেলবে। এক সূত্রের দাবি, বুধবার বিকেলেই দেবেন্দ্র ফডণবীসের নেতৃত্বে বিজেপি এবং অজিত পওয়ারের নেতৃত্বে এনসিপির বিধায়কেরা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি জানাতে পারেন।
২৩ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে বড় জয় পায় বিজেপি-শিন্ডেসেনা-এনসিপি (অজিত পওয়ার গোষ্ঠী) জোট ‘মহাজুটি’। কিন্তু তার পর থেকেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়। শোনা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে ফডণবীস এবং একনাথ শিন্ডের মধ্যে। বিজেপি শিবির তো বটেই অজিতের এনসিপিও ফডণবীসকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী চাইছে বলে খবর। কিন্তু শিন্ডেসেনা তাদের নেতা একনাথকেই মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি জানাচ্ছে। সেই জটিলতায় ফল ঘোষণার ১০ দিন কেটে গেলেও এখনও মুখ্যমন্ত্রী বাছাই কিংবা নতুন সরকার গঠন করতে পারেনি ‘মহাজুটি’।
সেই আবহেই বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, এমন ঘোষণা করেন মরাঠাভূমের বিজেপি নেতৃত্ব। এ-ও দাবি করা হয়, ফডণবীসই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন। তাঁর সঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন দুই সহযোগী দলের দুই প্রতিনিধি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন এনসিপির অজিত। কিন্তু শিন্ডেসেনাদের থেকে কে উপমুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা এখনও চূড়ান্ত নয়। শোনা যাচ্ছিল, একনাথ উপমুখ্যমন্ত্রী পদে ‘না’ বলেছেন। পরিবর্তে তাঁর ছেলে শ্রীকান্তকে করা হতে পারে। কিন্তু সোমবার সেই দাবি নাকচ করেছেন একনাথ-পুত্র নিজেই। সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত একনাথই উপমুখ্যমন্ত্রী হবেন। কিন্তু মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রিত্ব নিয়ে দর কষাকষি চলছে বিজেপি এবং শিন্ডেসেনার মধ্যে। সেই কারণে বৃহস্পতিবার পুরো মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ হবে না বলে খবর।
সোমবার দুপুরে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব নির্মলা এবং রূপাণীকে মহারাষ্ট্রের পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করায় মুখ্যমন্ত্রিত্বের ব্যাপারে রফাসূত্র পাওয়া গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু বিকেলেই অসুস্থতার কথা বলে শিন্ডে ফডণবীস ও অজিতের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করে দেন। তার ফলে চলতি অচলাবস্থা আদৌ কেটেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুরে ঠাণের একটি হাসপাতালে গিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করান শিন্ডে। এর পরে মুম্বইয়ে নিজের বাড়িতে যান। সেখানেই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান ফডণবীস। দীর্ঘ ক্ষণ কথা হয় দুই নেতার। মনে করা হচ্ছে, সেই বৈঠকে রফাসূত্র মিলেছে। অজিতও মঙ্গলবার দিল্লি থেকে মুম্বই ফিরেছেন।