বুধবার বেঙ্গালুরুর একটি বুথের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা। ছবি: পিটিআই। — ফাইল ছবি।
কর্নাটক বিধানসভা ভোটে দুপুর ৩টে পর্যন্ত ভোটদানের হার ৫২.০৩ শতাংশ। জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন।
কর্নাটকের তিন জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিজয়পুর জেলার মাসাবিনাল গ্রামে ভিভিপ্যাট যন্ত্র এবং ইভিএম ভাঙচুর করেন গ্রামবাসীরা। নির্বাচনী আধিকারিকরা ভোটের যন্ত্র বদলে দিয়েছেন বলে ‘গুজব’ ছড়াতেই ক্ষোভ ছড়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে। তার পরই ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটে ভাঙচুর চালান তাঁরা। আরও দু’টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে বেঙ্গালুরুর পদ্মনাভনগর এবং বল্লারি জেলার সঞ্জীবরায়নাকোতেতে।
কর্নাটকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভোটদানের হার ৩৭.২৫ শতাংশ। জানাল নির্বাচন কমিশন।
ভোটের দিন গোলমালে জড়িয়ে পড়ল কংগ্রেস এবং বিজেপি। সূত্রের খবর, চিত্রদুর্গা জেলায় মুখোমুখি চলে আসেন কংগ্রেস এবং বিজেপি সমর্থকেরা। দু’পক্ষের মধ্যে চলতে থাকে গালিগালাজ, ধাক্কাধাক্কি। একে অপরকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার ঘটনাও ঘটে। পুলিশ গিয়ে দু’পক্ষকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
কর্নাটকে কংগ্রেসের জয় নিয়ে নিশ্চিত প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘‘আমি তো শুরু থেকেই বলে যাচ্ছি, কংগ্রেস অন্তত ১৩০টি আসন পাবে। এখন যা বুঝছি, তাতে আসন সংখ্যা ১৫০ পেরিয়ে যেতে পারে।’’
কর্নাটকের চামনুরে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তুলেছেন চিতরপুরের কংগ্রেস প্রার্থী প্রিয়ঙ্ক খড়্গে। এ ব্যাপারে কমিশনের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কর্নাটকে ভোট পড়েছে ৮.০২ শতাংশ।
৪০ শতাংশ ঘুষ-মুক্ত, প্রগতিশীল কর্নাটকের স্বার্থে কংগ্রেস প্রার্থীদের ভোটদানের আবেদন জানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
ভোট দিলেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ বিজেপি নেতা বিএস ওয়েদুরাপ্পা। ভোট দিয়ে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সকাল, সকাল ভোট দিন। আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে মানুষ বিজেপির পক্ষে ভোট দেবেন। রাজ্যের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ বিজেপিকে সমর্থন দেবেন। আমরা ১৩০ থেকে ১৩৫টি আসন পেতে চলেছি।’’
কর্নাটকবাসীর কাছে বদলের জন্য ভোটদানের আহ্বান কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার।
ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসে ইনফোসিস কর্ণধান নারায়ণ মূর্তি বলেন, ‘‘আমাদের প্রথমে ভোট দিতে হবে তার পর বলতে হবে এটাই ভাল বা খারাপ। কিন্তু আমরা যদি ভোট না দিই তাহলে আমাদের সমালোচনা করার অধিকারও নেই।’’
ভোট দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী সুধা মূর্তিও।
ভোট দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসে তিনি বলেন, ‘‘মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে আমি বলব, আমি জনতার সঙ্গে আছি। এটা ঠিক যে, জনতার উপর বোঝা চাপানো কখনওই উচিত নয়। কিন্তু বিরোধীদের এটা নিয়ে বলা সাজে না। ওদের সময় কী অবস্থা ছিল?’’
ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসার পর সাংবাদিকদের অভিনেতা প্রকাশ রাজ বলেন, ‘‘আমাদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে ভোট দিতে হবে। আমাদের সুন্দর কর্নাটক চাই।’’
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে কর্নাটকের ভোট প্রসঙ্গে টুইটারে লিখেছেন, “কর্নাটকের জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তারা একটি প্রগতিশীল, স্বচ্ছ ও কল্যাণমুখী সরকার বেছে নেবেন। আজ বড় সংখ্যায় ভোটদানের সময় এসেছে। আমরা প্রথম বারের ভোটারদের একটি ভাল ভবিষ্যতের জন্য এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে স্বাগত জানাই।”
টুইটারে অমিত শাহ লিখেছেন, “ভোটের দিনে, আমি কর্ণাটকের বোন এবং ভাইদের রাজ্যের সুশাসন, উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির জন্য বিপুল সংখ্যক ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাই। আপনার একটি ভোটই নিশ্চিত করতে পারে জনগণের ও প্রগতির সরকার। যা রাজ্যকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।”
কর্ণাটকের জনগণকে, বিশেষ করে বিপুল সংখ্যক তরুণ এবং প্রথম বারের ভোটারদের ভোটদানের মাধ্যমে গণতন্ত্রের উৎসবকে সমৃদ্ধ করার জন্য আর্জি জানিয়ে টুইট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে ১০৪টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। কংগ্রেস ৮০ এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার জেডি(এস) ৩৭টিতে জেতে। কংগ্রেসের সঙ্গে ভোট পরবর্তী সমঝোতা করে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন দেবগৌড়া-পুত্র কুমারস্বামী। কিন্তু ২০১৯-এর জুলাই মাসে দু’দলের দেড় ডজনেরও বেশি বিধায়ক ভাঙিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি।
গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই, বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সিটি রবি, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার এবং তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া (কংগ্রেস), জগদীশ শেট্টার (কংগ্রেস) এবং এইচডি কুমারস্বামী (জেডি-এস)।
গত আড়াই দশকের মতোই বুধবারও ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে চলেছে কর্নাটক। ক্ষমতাসীন বিজেপি, প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার নেতৃত্বাধীন জেডি(এস)-এর মধ্যে। কোনও পক্ষই ভোটে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা না পেলে নির্ণায়ক হয়ে উঠতে পারে জেডি(এস)-এর ভূমিকা।