জোশীমঠের বাসিন্দারা নিজেদের ঘরবাড়ি এবং জীবিকা হারিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। ছবি: টুইটার।
ছত্রে ছত্রে বিপদ গাড়োয়াল হিমালয়ের জনপদ জোশীমঠে। সেই শহর কী ভাবে মাটিতে তলিয়ে যাচ্ছে, তার উদ্বেগজনক ছবিও প্রকাশ্যে এনেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। জোশীমঠের বাসিন্দারা নিজেদের ঘরবাড়ি এবং জীবিকা হারিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। এর মধ্যে বৃষ্টি ও তুষারপাতে পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। শুক্রবার শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে আউলিতে তুষারপাত শুরু হয়েছে। তাপমাত্রাও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে জোশীমঠের রাস্তায় রাত কাটানো বাসিন্দারা।
স্থানীয় হাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জোশীমঠে শুক্রবার ১.২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। বৃষ্টি এবং তুষারপাতের জেরে জোশীমঠ-সহ চামোলি জেলার বিভিন্ন এলাকায় পারদপতন হয়েছে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২ জানুয়ারি থেকে শুরু করে বিগত কয়েক দিনে জোশীমঠের ৭৬০-এরও বেশি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভয় ধরানো ফাটল দেখা গিয়েছে সেই শহরের রাস্তা-মন্দির-জমিতেও। আতঙ্কে রাতারাতি ভিটেমাটি ছাড়া সেই শহরের বহু মানুষ। ঠাঁই হয়েছে আশ্রয় শিবিরে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৬৯টি পরিবারকে ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছে। জোশীমঠকে ‘বসবাসের অযোগ্য’ বলেও ঘোষণা করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। কিন্তু বিপদে পড়েছেন তাঁরা, যাঁদের এখনও আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তলিয়ে যাওয়ার ভয় তাঁদের এমন ভাবে গ্রাস করেছে যে, তাঁরা নিজেদের বাড়িতেই রাত কাটাতে ভয় পাচ্ছেন। আপাতত তাঁদের ঠাঁই রাস্তাতেই। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাইরে বার করে এনে শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে খোলা আকাশের নীচে বাস করছেন তাঁরা। বৃষ্টি এবং তুষারপাতে তাঁদের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। রাস্তাতেই ঠক ঠক করে কাঁপতে কাঁপতে রাত কাটিয়েছেন তাঁরা। তবে প্রশাসনের দাবি, তাঁদেরও শীঘ্রই আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়া হবে।
আউলি ছাড়াও মুক্তেশ্বর, নৈনিতাল, চক্রতা এবং উত্তরকাশী জেলার উঁচু এলাকাগুলিতে তুষারপাত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় হাওয়া অফিসের ডিরেক্টর বিক্রম সিংহ বলেন, ‘‘জোশীমঠ এবং আশপাশের অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কমবে। রাতের পারদ ২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে। দিনের বেলায় ১০ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকবে তাপমাত্রা। আগামী কয়েক দিন উত্তরাখণ্ডে শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে। তার পর আবার বৃষ্টি এবং তুষারপাত হবে।’’