চম্পই সোরেন। ছবি: সংগৃহীত।
ঝাড়খণ্ডের সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন ইস্তফা দেওয়ার পর প্রায় ১৮ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। রাজ্যে কোনও সরকার না থাকায় বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে— এমনটা দাবি করে রাজ্যপালকে চিঠি দেন হেমন্তের অবর্তমানে জেএমএমের পরিষদীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়া চম্পই। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী, তার পরেই রাজভবনের তরফে সাড়া মেলে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় চম্পইকে সময় দিয়েছেন সে রাজ্যের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণন।
রাজ্যপালকে লেখা চিঠিতে চম্পই দাবি করেছিলেন যে, জেএমএম এবং জোট শরিক কংগ্রেস এবং আরজেডির মোট ৪৭ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে তাঁর সঙ্গে। রাজভবন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে এই ৪৭ জন বিধায়ককে রাজভবনে সশরীরে হাজির হতে বলেছেন রাজ্যপাল। তার পরই সরকার গঠনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ দল কিংবা জোটের নেতা হিসাবে চম্পইকে ডাকা হবে কি না, তা স্থির করবেন রাজ্যপাল।
জেএমএমের তরফে জানা গিয়েছে, চিঠিতে চম্পই জানিয়েছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে ৪৭ জন বিধায়ককেই রাজভবনে নিয়ে যাবেন তিনি। হিন্দিতে লেখা চিঠিতে চম্পই লেখেন, “স্যর, ১৮ ঘণ্টা হতে চলল রাজ্যে কোনও সরকার নেই। এর ফলে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আমরা বিধায়কেরা এবং রাজ্যের মানুষ আশা করছে যে, সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে আপনি একটি জনমুখী সরকার গঠনের জন্য পদক্ষেপ করবেন এবং বিভ্রান্তি থেকে রাজ্যকে বের করে আনবেন।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে চম্পই বলেছিলেন, ‘‘বুধবার রাতে রাজ্যপালের কাছে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডির ৪৭ জন বিধায়কের সমর্থনপত্র দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও সরকার গড়ার আমন্ত্রণ পাইনি। প্রতীক্ষায় রয়েছি।’’ তিনি জানান, অন্য রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার দু-তিন ঘণ্টা পরেই সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের নেতাকে সরকার গড়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট দেখা দিতে পারে আশঙ্কাপ্রকাশ করেন তিনি। তার পরেই রাজভবনের তরফে চম্পইকে সময় দেওয়া হয়।
৮১ আসনের ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ‘জাদুসংখ্যা’ ৪১। জেএমএম বিধায়ক সরফরাজ আহমেদের ইস্তফার কারণে এখন বিধায়ক সংখ্যা ৮০। শাসক জোটের রয়েছে ৪৮ জন বিধায়ক। জেএমএম ২৯, কংগ্রেস ১৬, আরজেডির ১ এবং সিপিআইএম লিবারেশন ১। কিন্তু হেমন্ত গ্রেফতার হওয়ার ফলে বিধানসভায় ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারবেন না। অন্য দিকে, বিরোধী শিবিরে রয়েছেন ৩২ বিধায়ক। বিজেপি ২৫, আজসু ৩, এনসিপি (অজিত) ১ এবং নির্দল ৩। অর্থাৎ আট জন বিধায়ক ভাঙাতে পারলেই রাঁচীর কুর্সি যাবে বিজেপির দখলে। বিরোধীদের একাংশের আশঙ্কা, বিধায়ক কেনাবেচার ‘সময়’ করে দিতেই চম্পইকে সরকার গড়তে আমন্ত্রণ জানাতে দেরি করা হচ্ছে।