Sheikh Hasina

শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বৃদ্ধি করল নয়াদিল্লি

দু’দিন আগেই হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরানোর জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাসিনা এবং সহঅভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির হতেও বলা হয়।

Advertisement

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:০৮
Share:

শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে ভারতের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। কূটনৈতিক সূত্রে আজ এ খবর জানা গিয়েছে। আজই আবার বাংলাদেশের অভিবাসন এবং পাসপোর্ট দফতর হাসিনার পাসপোর্টও বাতিল করেছে।

Advertisement

দু’দিন আগেই হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরানোর জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাসিনা এবং সহঅভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির হতেও বলা হয়। সে দেশের জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল ফজলুর রহমান বলে রাখেন, ভারত যদি শেখ হাসিনাকে না পাঠায়, তা হলে অনুমতি সাপেক্ষে ভারতে গিয়েও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রাজি কমিশন। গোটা বিষয়টিকে নয়াদিল্লির উপরে চাপ বাড়ানোর কৌশল হিসেবেই দেখেছে ভারত। শীর্ষ কূটনৈতিক সূত্রের খবর, এই পরিপ্রেক্ষিতেই অতি সম্প্রতি শেখ হাসিনার ভারতে থাকার রেসিডেন্ট পারমিটের মেয়াদ বাড়িয়েছে মোদী সরকার।

এর মধ্যে আজই হাসিনা-সহ মোট ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হল বাংলাদেশে। জুলাই আন্দোলনে দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে এঁদের সকলের বিরুদ্ধেই। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস উপসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার সাংবাদিক সম্মেলন করে এ খবর জানান। তবে হাসিনা ছাড়া পাসপোর্ট বাতিল হওয়া আর কারও নাম জানানো হয়নি। হাসিনাকে কেন্দ্র করে ভারত-বাংলাদেশ স্নায়ুর লড়াই অতএব আরও এক ধাপ চড়ল।

Advertisement

তবে দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রে দাবি করা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি ‘কূটনৈতিক’ নয়, ‘আইনি’। কোনও অন্তর্বর্তী সরকার অন্য রাষ্ট্রের স্থায়ী সরকারের কাছে কোনও রাজনৈতিক নেতার প্রত্যর্পণ চাইলে, তার সমস্ত আইনি দিক খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলেই বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে। ফলে, হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের পাঠানো কূটনৈতিক বার্তার (নোট ভার্বাল) উত্তর অবশ্যই দেওয়া হবে ‘যথাসময়ে’। কিন্তু তার জন্য কোনও তাড়াহুড়ো করা হবে না। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বাংলাদেশের বার্তার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে জবাব দিতে কয়েক মাসও লেগে যেতে পারে। আর সে কারণেই হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

সূত্রের খবর, দিল্লির ‘ফরেন রিজিয়নাল রেজিস্ট্রেশন অফিসের’ (এফআরআরও) মাধ্যমে আবেদন করিয়ে ভারতে থাকার কাগজ বৈধ করে নেওয়া হয়েছে। ইঙ্গিত স্পষ্ট, এখনই হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর কোনও প্রশ্নই উঠছে না ভারতের তরফে। প্রসঙ্গত, ভারতে কোনও উদ্বাস্তু সংক্রান্ত আইন না থাকায় এফআরআরও–র মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিক হাসিনাকে ভারতে বসবাসের বৈধতা দেওয়া হয়েছে। তবে কত দিনের জন্য এই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

উল্লেখ্য, শুধুমাত্র একটি ‘নোট ভার্বাল’ দিয়েই দিল্লির কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছিল ঢাকা। সাউথ ব্লকের একটি সূত্রের বক্তব্য, এই দাবিকে পোক্ত করতে সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এই ধরনের প্রত্যর্পণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আইনি দিক থাকে। দিল্লির দাবি, সেই খুঁটিনাটির দিকে নজর দেওয়া হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement