মলদ্বীপ বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। — ফাইল চিত্র।
সব দেশ, সব সময় ভারতের সঙ্গে একমত হবে, ভারতকে সমর্থন করবে, এই নিয়ে ‘গ্যারান্টি’ দেওয়া সম্ভব নয়। ‘রাজনীতি আসলে রাজনীতিই’। ভারত-মলদ্বীপ চাপানউতর প্রসঙ্গে নাগপুরে একটি কর্মসূচিতে এই কথাই বললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
অতীতে প্রায় সব সময় ভারতের পাশে ছিল মলদ্বীপ। মহম্মদ মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর থেকেই দূরত্ব বেড়েছে। শুরু হয়েছে চাপানউতর। এই প্রসঙ্গে শনিবার একটি কর্মসূচিতে বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজনীতি আসলে রাজনীতিই। আমি কখনওই গ্যারান্টি দিতে পারব না যে, সব দেশে প্রতিদিন প্রত্যেক মানুষ আমাদের সমর্থন করবেন, বা আমাদের পাশে থাকবেন।’’ তবে তিনি মনে করেন, গত ১০ বছর ধরে পৃথিবীর বাকি দেশের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেছে ভারত।
জয়শঙ্কর আরও বলেন, ‘‘গত ১০ বছর ধরে আমরা যেটা চেষ্টা করেছি, তা হল দৃঢ় সম্পর্ক তৈরি করা। এর ফলে কখনও রাজনৈতিক চাপানউতর হলেও, সেই দেশের মানুষের যাতে ভারতের প্রতি সুন্দর অনুভূতি থাকে, তাঁরা যাতে বোঝেন যে, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেই চেষ্টাই করা হয়েছে।’’
সম্প্রতি চিনের সঙ্গে ২০টি চুক্তি করেছে মলদ্বীপ। দ্বীপরাষ্ট্রকে পরিকাঠামো উন্নয়নে সাহায্য দেওয়ার কথাও জানিয়েছে বেজিং। বদলে চিনের থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে মলদ্বীপ। মনে করা হচ্ছে, এর ফলে আরও বিপাকে পড়তে চলেছে মলদ্বীপ। চিনের কাছে ক্রমেই হাত-পা বাঁধা পড়তে চলেছে তাদের। সরাসরি এই নিয়ে মুখ না খুললেও জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, অন্য অনেক দেশে রাস্তা নির্মাণ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি জোগানে সাহায্য করছে ভারত। বিনিয়োগ করছে। তাদের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সাহায্য করছে। তাঁর কথায়, ‘‘কী ভাবে তুমি অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাবে, এগুলি তারই অংশ।’’ তিনি এ-ও বলেন, সব সময় সব কিছু ভাল ভাবে চলে না। কিন্তু মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন।
লক্ষদ্বীপে গিয়ে ছবি পোস্ট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তা দেখে কুমন্তব্য করেছিলেন মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী মালশা শরিফ, মারিয়ম শিউনা, আবদুল্লা মাহজুম মজিদ। সেই নিয়েই শুরু দুই দেশের কূটনৈতিক টানাপড়েন। তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান শাসকদল থেকে বিরোধী নেতা, বিশিষ্টজনেরা। সমাজমাধ্যমে মলদ্বীপ ‘বয়কটের’ ডাক দেওয়া হয়। এ সবের নেপথ্যে চিনের ‘প্ররোচনা’ দেখেছে একটা অংশ। এই আবহে দিন কয়েক আগে চিন সফরে গিয়েছেন মলদ্বীপের নতুন প্রধানমন্ত্রী মুইজ্জু। যদিও মলদ্বীপের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, মোদীকে তিন মন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, তাকে সমর্থন করে না দ্বীপরাষ্ট্র। এই মন্তব্য ‘গ্রহণযোগ্য’ নয়। মলদ্বীপের দূতকে ডেকে পাঠায় দিল্লি। প্রতিবাদও জানায়। এই প্রেক্ষাপটে এ বার বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করলেন জয়শঙ্কর।