লরেন্স বিশ্নোইয়ে দুষ্কৃতী দলের আরও এক সদস্যকে হেফাজতে নিল পুলিশ। — প্রতীকী চিত্র।
লরেন্স বিশ্নোইয়ের দুষ্কৃতী দলের আরও এক সদস্যকে নিজেদের হেফাজতে নিল জয়পুর পুলিশ। বিশ্নোই গ্যাংয়ের তোলাবাজি এবং হুমকি চক্রের বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতীকে সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শনিবার জয়পুর থেকে সীমা মলহোত্র ওরফে ‘ম্যাডাম মায়া’ ধরা পড়েন পুলিশের হাতে। তিনিও বিশ্নোই গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য বলে দাবি জয়পুর পুলিশের। সেই তদন্তের সূত্র ধরেই রাজেন্দ্র সিংহ ওরফে ‘জোকার’-এর যোগের বিষয়ে জানতে পারে পুলিশ। তিনি আগে থেকেই একটি মামলায় পঞ্জাবের ভাটিন্ডা জেলে বন্দি। বুধবার জয়পুর পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে মঙ্গলবার তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
পঞ্জাবের গায়ক তথা রাজনীতিক সিধু মুসেওয়ালার খুনের মামলায় পঞ্জাবের জেলে বন্দি ছিলেন রাজেন্দ্র। পুলিশ সূত্রে খবর, জেলবন্দি থাকাকালীনই রাজস্থানের জয়পুরে দুই ব্যবসায়ীর থেকে তোলাবাজির ছক কষেন তিনি। শুধু তাই নয়, জেলে থেকেই ‘ম্যা়ডাম মায়া’র সাহায্য নিয়ে বিশ্নোইয়ের দুষ্কৃতী দলে নতুন সদস্য নিয়োগ করতেন রাজেন্দ্র। জয়পুরে দুষ্কৃতী দলের হয়ে ব্যবসায়ীদের হুমকি এবং তোলাবাজির কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন সীমা ওরফে ‘ম্যাডাম মায়া’। লরেন্সের দুষ্কৃতী দলের একাধিক সদস্য জেলবন্দি। পুলিশ সূত্রে খবর, দুষ্কৃতী দলের কোন সদস্যের কখন জামিন চাওয়া হবে, সেটিও নিয়ন্ত্রণ করতেন সীমা।
জয়পুর পুলিশের এক আধিকারিক হরিওম সিংহ জানিয়েছেন, বিশ্নোই গ্যাংয়ের হয়ে ব্যবসায়ীদের হুমকি দিতেন রাজেন্দ্র। রোহিত গোদারা, সম্পত নেহরা এবং গোল্ডি ব্রারের মতো বিশ্নোইয়ের একাধিক সহযোগীর সঙ্গে অভিযুক্তের সরাসরি যোগাযোগ ছিল বলে দাবি পুলিশের। বিশ্নোই গ্যাংয়ের উপরতলার বেশ কয়েকজন সমাজবিরোধীর সঙ্গে রাজেন্দ্রের যোগ ছিল। দুষ্কৃতী দলের একাধিক দায়িত্ব ছিল তাঁর উপর। পুলিশ সূত্রে খবর, কাদের থেকে টাকা তোলা হবে, এমন সম্ভব্য ‘শিকার’ খুঁজে বার করতেন তিনি। সমাজমাধ্যম থেকে তাঁদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করানোর দায়িত্বও ছিল রাজেন্দ্রর উপর। এ ছাড়া দুষ্কৃতী দলে তরুণদের নিয়োগ করা, মাদক এবং অস্ত্র পাচারের কারবার সামলানোর দায়িত্বও ছিল রাজেন্দ্র ওরফে ‘জোকার’-এর উপর। পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং রাজস্থান মিলিয়ে ২১টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
লরেন্স বিশ্নোই দীর্ঘদিন ধরে জেলবন্দি। বর্তমানে গুজরাতের সবরমতি জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। তার আগে বিশ্নোইকে দিল্লির তিহাড় জেলে রাখা হয়েছিল। বিশ্নোই জেলবন্দি থাকার পরেও তাঁর দুষ্কৃতী দলের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকি খুনের মামলাতেও নাম জড়িয়েছে বিশ্নোই গ্যাংয়ের। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র চার্জশিট অনুসারে, বিশ্নোইয়ের দুষ্কৃতী দলে রয়েছে প্রায় ৭০০ শ্যুটার (ভা়ড়াটে খুনি), যাঁরা টাকার বিনিময়ে খুন করেন। এই ভাড়াটে খুনির দল সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে রয়েছে পঞ্জাবে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, সেখানে বিশ্নোই গ্যাংয়ের অন্তত ৩০০ দুষ্কৃতী ছড়িয়ে রয়েছেন।