জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। প্রতীকী ছবি।
প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায় জম্মু-কাশ্মীরের ডিজিপির সঙ্গে দীর্ঘ বচসা। এর পরে থানায় গিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ। বক্তব্য, ডিজিপির হুমকিতে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি। এ ঘটনার দেড় সপ্তাহ পরে ‘যথাযথ আচরণবিধি না-পালন ও বারবার আপত্তিকর ব্যবহারের’ অভিযোগে জম্মু-কাশ্মীরের ‘দাবাং’ আইপিএস অফিসার বসন্তকুমার রথকে সাসপেন্ড করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
ভারত সরকারের আন্ডার সেক্রেটারি এস ডি সরকারের জারি করা নির্দেশিকায় এ-ও জানানো হয়েছে: ‘‘রথ যত দিন সাসপেন্ড থাকবেন, তাঁর হেডকোয়ার্টার থাকবে জম্মু। এই সময়ে জম্মু-কাশ্মীরের ডিজিপি-র অনুমতি না-নিয়ে হেডকোয়ার্টার ছেড়ে যেতে পারবেন না তিনি।’’ কত দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে, তা অবশ্য নির্দেশিকায় উল্লেখ নেই। রথের বেতনেও কোপ পড়েছে। সাসপেন্ড থাকাকালীন মহার্ঘ ভাতা ও অগ্রিম বেতন পাবেন তিনি।
২০০০-ব্যাচের এই আইপিএস অফিসার ওড়িশার ছেলে। ২০১৮ সালে পদোন্নতি হয়ে আইজিপি হন রথ। জম্মু-কাশ্মীরের ট্র্যাফিকের দায়িত্ব সামলে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। তা ছাড়া, দুঃস্থ মেধাবী পড়ুয়াদের মধ্যে বই বিলি, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসার জন্য অনুপ্রেরণা দেওয়া, এ ধরনের একাধিক কাজে বেশ নামডাক হয়েছিল জেএনইউয়ের এই প্রাক্তনীর। তবে ট্র্যাফিক পরিষেবা ও রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে বিজেপি ঘনিষ্ঠ মেয়র ও সেই সঙ্গে বেশ কিছু নেতা, আমলা এবং পুলিশের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান। তাতেও নাম করেন। নেতামন্ত্রীদের সামনে নরম না-হওয়ায় মিডিয়ায় ‘দাবাং আইপিএস’ হয়ে ওঠেন। কম্যানড্যান্ট জেনারেল (হোম গার্ডস/ সিভিল ডিফেন্স/ এসডিআরএফ) অফিসে বদলি করা হয় তাঁকে।
আরও পড়ুন: ৩ লক্ষ পরিযায়ীর জন্য কম খরচে ঘর, সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার
২৫ জুন ডিজিপি দিলবাগ সিংহের (১৯৮৭ ব্যাচের আইপিএস) সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান রথ। সোশ্যাল মিডিয়ায় চলে বচসা। গত মাসেই জম্মুর গাঁধী নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রথ। অভিযোগ, তাঁর নিরাপত্তা ও মর্যাদানাশের হুমকি দিয়েছেন দিলবাগ। রথ এফআইআর করেননি, কিন্তু প্রশাসনের কাছে অনুরোধ ছিল, অভিযোগ গ্রহণ করে বিষয়টি নজরে রাখতে, বিশেষ করে যদি তাঁর কিছু হয়ে যায়। এর আগের কথা: বেশ কিছু টুইটে ডিজিপি-কে ‘দিল্লো’ বলে উল্লেখ করেছিলেন রথ। ডিজিপি-ও চুপ থাকেননি। এক সাংবাদিকের তৈরি করা ‘কাশ্মীর ফার্স্টপোস্ট’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রথের নিন্দা করেন ডিজিপি। সেখানে দিলবাগ সিংহ লিখেছিলেন, ‘আইপিএসের নামে লজ্জা, পদোন্নতি হয়ে আইজি হয়েছে এবং যত বার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নিজেকে জোকার। চ্যালেঞ্জ করছি, যদি আমার বিরুদ্ধে কিছু প্রমাণ করতে পারে ও।’’ হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে ডিজিপি-র এই মন্তব্যের স্ক্রিনশট তুলে টুইটারে পোস্ট করেন রথ। সঙ্গে লেখেন, দিলবাগ সিংহের বিরুদ্ধে যে ‘অভিযোগের বন্যা’ রয়েছে, সে সব নথিভূক্ত করা হোক।