ফাইল চিত্র।
বিতর্কিত সেই ৩৬-এর পরে আরও ৩৬! আজ নয়াদিল্লিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ-র কূটনৈতিক উপদেষ্টা ইমানুয়েল বন-এর বার্ষিক বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে আরও ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনাবেচার প্রসঙ্গ গুরুত্ব সহকারে উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর।
সম্প্রতি জি-৭-এর সাড়ম্বর অনুষ্ঠানে ফ্রান্সের তরফ থেকে নরেন্দ্র মোদীকে অতিথি হিসাবে ডেকে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলির সঙ্গে বৈঠক করিয়ে নয়াদিল্লির মন জয়ের পর্ব চুকেছে। ইরান থেকে ভারতের তেল আমদানির প্রশ্নে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনুরোধও করেছেন মাকরঁ। কূটনৈতিক শিবির মনে করছে নতুন দফায় ৩৬টি যুদ্ধবিমান বিক্রি নিয়ে ফ্রান্স এ বার ‘কাজের কথা’ শুরু করেছে। তবে এ বারের যুদ্ধবিমানগুলো ভারতে সরাসরি উড়িয়ে পাঠানো হবে না। সূত্রের খবর, নরেন্দ্র মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র অংশ হিসাবে যন্ত্রাংশ পাঠিয়ে ভারতেই তা তৈরি করার সম্ভাবনা বেশি।
মাকরঁ-র সঙ্গে মোদীর বৈঠকেই বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক কথা হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। এ বার সরকারের বিভিন্ন স্তরে আলোচনা এগোবে। আজ ডোভালের সঙ্গে বন-এর বার্ষিক বৈঠকটি পূর্বনির্ধারিতই ছিল। দু’দেশের নিরাপত্তা সমন্বয় জোরদার করাই এই বার্ষিক সংলাপের উদ্দেশ্য। সূত্রের খবর, সেই কথাবার্তার অংশ হিসাবেও রাফাল কেনাবেচার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। মহাকাশ, সাইবার সুরক্ষা এবং পরমাণু ক্ষেত্রে দু’দেশের সহযোগিতা নিয়েও বৈঠকে কথা হয়েছে বলে খবর।
সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ প্যারিসে যাবেন। সেখানে প্রথম দফার ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমানের মধ্যে একটি, আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে। রাফাল ভারতে পৌঁছনোর আগে ভারতের বায়ুসেনার পাইলটরা সে দেশে প্রশিক্ষণও নেবেন।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই রাফাল নিয়েই লোকসভা নির্বাচনে উত্তাল হয়েছিল জাতীয় রাজনীতি। অনিল অম্বানীর সংস্থাকে ১১০০ কোটি টাকা কর মকুব করেছিল ফ্রান্স, এমন অভিযোগ প্রকাশ্যে চলে আসায় হইচই পড়ে যায়। কংগ্রেসও রাফাল দুর্নীতি নিয়ে ভোটের প্রচারে গিয়েছিল। কিন্তু ভোটের ফলাফলে রাফাল-দুর্নীতির অভিযোগ সে ভাবে ছাপ না ফেলায় আরও ৩৬টি বিমান কেনা নিয়ে আদৌ দ্বিধাগ্রস্ত নন মোদী। মাকরঁ-র কাছেও তা বাণিজ্যিক ভাবে সুবিধাজনক। তবে সাউথ ব্লকের বক্তব্য, ফ্রান্স এই মুহূর্তে কৌশলগত ভাবে ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র। ইরান থেকে তেল আমদানি, বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে জোট অথবা কাশ্মীর— সব ক্ষেত্রেই প্যারিসকে পাশে পাচ্ছে দিল্লি। ফলে তাদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা বাণিজ্য এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে— এটাই স্বাভাবিক।