(বাঁ দিকে) রেললাইনের উপর থেকে উদ্ধার হওয়া লোহার রড এবং ঘটনাস্থলে রেলপুলিশ (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
কখনও রেললাইনের উপর গ্যাস সিলিন্ডার, কখনও আবার সিমেন্টের চাঁই। পর পর এই ঘটনাগুলিতে উদ্বিগ্ন ভারতীয় রেল। এ বার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন লোহার রড। সোমবার ভোরে পঞ্জাবের ভাতিন্দায় রেললাইনের উপর পড়ে থাকতে দেখা যায় লোহার রড। এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি লোহার রড একত্রিত করে ফেলে রাখা ছিল লাইনের উপর। কে বা কারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ট্রেন লাইনচ্যুত করার উদ্দেশ্যে কোনও দুষ্কৃতীর দল এই কাজ ঘটিয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পঞ্জাবের রেলপুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার ভোর তিনটে নাগাদ। ভাতিন্দা-দিল্লি সংযোগকারী লাইনের উপর। সেই সময় ওই লাইন দিয়ে একটি মালগাড়ি যাচ্ছিল। লাইনের উপর এতগুলি লোহার রড পড়ে থাকতে দেখে সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক কষেন মালগাড়ির চালক। সময় মতো মালগাড়ি থামানোয় অঘটন এড়ানো যায়। ভাতিন্দায় রেলপুলিশের তদন্তকারী আধিকারিক শবিন্দর কুমার জানিয়েছেন, কোনও দুষ্কৃতী এই ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ৯টি রড উদ্ধার হয়েছে।
রবিবারই উত্তরপ্রদেশে রেললাইনের উপর থেকে গ্যাসের সিলিন্ডার উদ্ধার হয়েছিল। কিছু দিন আগেও উত্তরপ্রদেশে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। রাজস্থানের অজমেরে মালগাড়ি চলাচলের লাইনের উপর ফেলে রাখা হয়েছিল সিমেন্টের বিশাল চাঁই। ওয়েস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের উপর দু’টি সিমেন্টের চাঁই ফেলে রাখা হয়েছিল। পর পর এই ধরনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন ভারতীয় রেল। রেলের তরফে সম্প্রতি একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত অগস্ট থেকে অন্তত ১৮ বার ট্রেন বেলাইন করার চেষ্টা হয়েছে। রেলের ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, শুধু অগস্টেই ১৫ বার ট্রেন লাইনচ্যুত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তিন বার চেষ্টা করা হয়েছে সেপ্টেম্বরের শুরুতে।
অগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে যে সব রাজ্যে এই প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা এবং তেলঙ্গানা। তবে উত্তরপ্রদেশে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। রেলের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেও একাধিক জায়গায় এই ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। দু’দিন আগেই গুজরাতে লাইনের ফিশপ্লেট খুলে রাখারও অভিযোগ উঠেছিল। যদিও সব ঘটনাই ট্রেন লাইনচ্যুত করার উদ্দেশে ইচ্ছাকৃত ভাবে করা হয়েছিল কি না, সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।