অভিযুক্ত পুরষোত্তম শর্মা (বাঁ দিকে)। এই দৃশ্যই ধরা পড়ে ক্য়ামেরায়।
মাটিতে ফেলে স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করছেন আইপিএস অফিসার। গোপন ক্যামেরায় বন্দি হল গোটা ঘটনা। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে নিমেষে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সেই ভিডিয়ো। কিন্তু অনুতপ্ত হওয়া তো দূর, স্ত্রীর গায়ে হাত তুলে কোনও অন্যায় করেননি বলে জানিয়ে দিলেন অভিযুক্ত ওই আইপিএস অফিসার। বাড়িতে ক্যামেরা লাগানোর জন্য উল্টে স্ত্রীকেই দুষলেন তিনি।
১৯৮৬ ব্যাচের আইপিএস অফিসার তথা মধ্যপ্রদেশে কর্মরত ডিজি পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার পুরুষোত্তম শর্মার বিরুদ্ধেই স্ত্রীর উপর শারীরিক নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। যে মারধরের ভিডিয়ো সামনে এসেছে, সেটা তাঁর বাড়িতেই তোলা বলে জানা গিয়েছে। তবে আনন্দবাজার ডিজিটাল ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি।
ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, টেনে হিঁচড়ে ঘর থেকে এক মহিলাকে ড্রয়িংরুমে বার করে আনছেন অভিযুক্ত। ঘটনাস্থলে রয়েছেন আও দুই ব্যক্তি এবং একটি পোষ্য। ধস্তাধস্তির পর ওই মহিলাকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করছেন তিনি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত দুই ব্যক্তি শেষমেশ নিরস্ত করেন তাঁকে।
এই ভিডিয়োই সামনে এসেছে।
আরও পড়ুন: বাবরি রায়ে হাজির থাকতে চাই, হাসপাতালে ভর্তি হয়ে জানালেন কোভিড আক্রান্ত উমা ভারতী
নিগ্রহের শিকার ওই মহিলা অভিযুক্ত আইপিএস অফিসারের স্ত্রী বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে স্বামীকে প্রশ্ন করাতেই তাঁকে মারধর করা হয়।
ভিডিয়োটি সামনে আসতেই দায়িত্ব থেকে সরানো হয় পুরুষোত্তম শর্মাকে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে তিনি কোনও অন্যায় করেননি বলে সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন পুরুষোত্তম শর্মা। স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘‘আমি যদি এতই অভদ্র হই, তাহলে আগেই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা উচিত ছিল ওর। এটা পারিবারিক ঝামেলা। আমি একেবারেই হিংস্র নই। কোনও অপরাধ করিনি। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমাকে এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। স্ত্রী সারাক্ষণ আমার উপর নজর রাখে। বাড়িতে গোপন ক্যামেরাও বসিয়েছে।’’
৩২ বছরের বিবাহিত জীবনে ২০০৮ সালেও এক বার পুরুষোত্তম শর্মার বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁর স্ত্রী। তবে অভিযুক্ত আইপিএস অফিসারের যুক্তি, ‘‘২০০৮ সালে অভিযোগ করেছিল বটে। কিন্তু তার পরেও আমার বাড়িতে থেকেছে। সবরকমের সুবিধা নিয়েছে আমার কাছ থেকে। আমার টাকায় বিদেশও গিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: কৃষক বিক্ষোভের আঁচ রাজধানীতে, পুড়ল ট্রাক্টর, পঞ্জাবে অনড় চাষিরা
গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। তিনি বলেন, ‘‘ওঁকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত কেই যদি বেআইনি কাজকর্মে লিপ্ত হয় এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেয়, তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। তা সে যে-ই হোক না কেন।’’
রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভিডিয়োটি দেখেছি। খবরটিও চোখে পড়েছে। ওই মহিলার অভিযোগ পেলে দেখছি কী করা যায়।’’
গোটা ঘটনায় নড়চড়ে বসেছে জাতীয় মহিলা কমিশনও। বিষয়টি নিয়ে শিবরাজ সিংহ চৌহানকে চিঠি দিয়েছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনায় সমাজের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছয়।’’