প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকে যাওয়া নিয়ে আজ কেন্দ্রকে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে পঞ্জাব সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় গাফিলতির তদন্তে নেমে আজ পঞ্জাব পুলিশের ডিজিপি-সহ অন্তত ডজনখানেক আমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করল কেন্দ্রীয় সরকারের তিন সদস্যের কমিটি। একই সঙ্গে ভাটিন্ডার সিনিয়র পুলিশ সুপার অজয় মালুজা-সহ দায়িত্বে থাকা ছয় পুলিশ আধিকারিককে শো-কজ নোটিস পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আগামিকালের মধ্যেই তাঁদের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকে যাওয়া নিয়ে আজ কেন্দ্রকে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে পঞ্জাব সরকার। মুখ্যসচিব অনিরুদ্ধ তিওয়ারি ওই রিপোর্টে তদন্তের সর্বশেষ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরার পাশাপাশি জানিয়ে দিয়েছেন, ওই ঘটনা নিয়ে পঞ্জাব পুলিশ একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও দু’সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে, তিন দিনের মধ্যে তার রিপোর্ট জমা পড়বে। মোদীর কনভয় আটকানোর দিনের ঘটনাক্রমও তুলে ধরেছেন মুখ্যসচিব। জানিয়েছেন, সে দিনের ঘটনা নিয়ে ফিরোজপুর জেলার কুলগড়হি থানায় দেড়শো জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকানোর পর তিন সদস্যের তদন্তকারী দল গঠন করেছে কেন্দ্রও। ওই দলের সদস্যরা হলেন, ক্যাবিনেট সচিবালয়ের সচিব (সুরক্ষা) সুধীর সাক্সেনা, আইবি-র জয়েন্ট ডিরেক্টর বলবীর সিংহ ও প্রধানমন্ত্রীর স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের আইজি এস সুরেশ। আজ সকালে প্রবল কুয়াশার মধ্যেই দলটি ফিরোজপুরে পৌঁছে যায়। যে ফ্লাইওভারে মোদী প্রায় কুড়ি মিনিট আটকে ছিলেন, সেটি ঘুরে দেখেন তাঁরা। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে ফ্লাইওভারে ছিলেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে যান ১০ কিলোমিটার দূরে বিএসএফ দফতরে। তদন্তকারীরা পঞ্জাব পুলিশের ডিজি সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ প্রধানমন্ত্রীর পঞ্জাব সফরের সামগ্রিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১২ জন আইপিএস আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিলেন। সূত্রের দাবি, ঘটনার দিন ফিরোজপুরের কন্ট্রোল রুমে যাঁরা ভিআইপি নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্তকারীরা পঞ্জাব পুলিশের ডিজি, অতিরিক্ত ডিজি, দু’জন আইজি, ডিআইজি ছাড়াও ভাটিন্ডা-সহ সংলগ্ন চার জেলার সিনিয়র পুলিশ সুপার, ডেপুটি কমিশনার, দায়িত্বে থাকা জেলাশাসককেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ভাটিন্ডার সিনিয়র পুলিশ সুপার অজয় মালুজা-সহ ছয় পুলিশ আধিকারিককে শো-কজ নোটিস পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার জবাব চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, যথাযথ উত্তর না পাওয়া ও তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে ওই আমলাদের সাসপেন্ড, পদোন্নতি আটকে যাওয়া থেকে শুরু করে বাধ্যতামূলক অবসরের মতো শাস্তি হতে পারে।
গত বছর পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় তিন আইপিএস আধিকারিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেছিল কেন্দ্র। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ওই আইপিএস আধিকারিকদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার না ছাড়ায় কেন্দ্রীয় ক্যাডারে যোগ দেওয়া হয়ে ওঠেনি তাঁদের। তাই এ বার পঞ্জাব পুলিশের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কতটা ব্যবস্থা নিতে পারবে কেন্দ্র, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে।