শুক্রবার কোচির কর্মসূচিতে মোদীর বক্তৃতার পরেই প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভারতীয় নৌসেনার প্রথম বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রান্ত আড়াই আগেই অতীত। একই নামে দেশে তৈরি প্রথম বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ শুক্রবারই যোগ দিয়েছে ভারতীয় নৌসেনায়। আর কেরলের কোচিতে নৌসেনা ‘ডক ইয়ার্ডে’ আয়োজিত সেই কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
শুক্রবার কোচির কর্মসূচিতে মোদীর বক্তৃতার পরেই প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। দলের নেতা জয়রাম রমেশ এ বিষয়ে ধারাবাহিক টুইট করেন। প্রথমেই তাঁর প্রশ্ন— ‘শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আইএনএস বিক্রান্তের কমিশন (আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া) করেছেন। সেখানে কি তিনি এ বিষয়ে ১৯৯৯ থেকে পূর্ববর্তী সরকারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন?’
ঘটনাচক্রে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমলে আইএনএস বিক্রান্তের নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। ২০১৩ সালের ১২ অগস্ট কোচিতে সেই কর্মসূচির উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী একে অ্যান্টনি। কিন্তু শুক্রবার মোদী তাঁর বক্তৃতায় সেই প্রসঙ্গ পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে টুইটারে রমেশ লিখেছেন, ‘আত্মনির্ভর ভারত যে ২০১৪ সালের আগেও ছিল, প্রধানমন্ত্রী সেই ধারবাহিকতা স্বীকার করতে পারতেন।’
স্বাধীনতার পর দেশের প্রধান বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রান্তকে ভারতীয় নৌসেনা শামিল করতে জওহরলাল মন্ত্রিসভার প্রতিরক্ষামন্ত্রী কৃষ্ণ মেনন যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন রমেশ। বস্তুত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ই ব্রিটিশ সরকার ওই বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজটি তৈরি শুরু করেছিল। নাম দেওয়া হয়েছিল হারকিউলিস। কিন্তু নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই যুদ্ধ থেমে যায়। হারকিউলিস তৈরিও থামিয়ে দেয় ব্রিটিশরা। নেহরু সরকারের উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে সেই অসমাপ্ত হারকিউলিস কিনে নিয়েছিল ভারত। ১৯৬১ সালে তার নির্মাণ শেষ হয়। তার পর আইএনএস বিক্রান্ত নাম দিয়ে ভারতীয় নৌসেনার অন্তর্ভুক্ত করা হয় যুদ্ধজাহাজটিকে।
১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বিক্রান্তের। ১৯৯৭ সালে ভারতীয় নৌসেনা থেকে বিক্রান্তের অবসরের পর তার স্মৃতিতে নতুন বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলে। কংগ্রেসের অভিযোগ, অতীতে অটল সুড়ঙ্গ নির্মাণ, ব্যাঙ্ক সংস্কার থেকে জিএসটির মতো নানা বিষয়েই পূর্বতন সরকারে ভূমিকা এড়িয়ে গিয়েছেন মোদী। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন আইএনএস বিক্রান্ত।