রাজ্য বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের নালিশ অমিত শাহকে জানানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। —ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এ বার গড়াল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দরবারে। দিল্লির বিজেপি সূত্রের খবর, শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত এবং আরও দুই সাংসদ অর্জুন সিংহ ও জগন্নাথ সরকার শাহের সঙ্গে দেখা করে বঙ্গ বিজেপির সংগঠন নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে ওই বৈঠক নিয়ে ওই মন্ত্রী এবং সাংসদদের কেউই মুখ খোলেননি। তাঁদের কারও সঙ্গে ফোনেও যোগাযোগ করা যায়নি।
বিজেপি সূত্রের খবর, দলে বেশ কিছু দিন ধরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দানা বাঁধছে। দলের একাংশের অভিযোগ, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায় সংগঠনে ‘কাজের লোকেদের’ চেয়ে ‘কাছের লোকেদের’ বেশি গুরুত্ব দেন। ফলে যোগ্য লোকেরা নিষ্ক্রিয় থাকেন। এমন চললে আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূলকে হারানোর স্বপ্ন অধরাই থাকবে। গত সোমবার দিল্লিতে দলীয় বৈঠকে প্রকাশ্যেই এই ক্ষোভ উগরে দেন অর্জুন-সহ অনেকে। পরে অবশ্য দিলীপবাবু, সুব্রতবাবু এবং অর্জুন দাবি করেন, এমন কোনও দ্বন্দ্ব দলে নেই এবং তার প্রকাশও বৈঠকে ঘটেনি। কিন্তু দিল্লির বিজেপি-র একটি সূত্রের দাবি, ওই দ্বন্দ্ব সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়েই বাবুল, স্বপনবাবু, অর্জুন এবং জগন্নাথ শাহের কাছে দরবার করেছেন।
দিলীপবাবু অবশ্য শাহের সঙ্গে বাবুল, স্বপনবাবু-সহ চার জনের শুক্রবারের বৈঠক নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘এমন কোনও বৈঠকের কথা বা কে কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ করেছেন, আমার জানা নেই। কিছু বলারও নেই।’’ এ বিষয়ে সুব্রতবাবুর প্রতিক্রিয়া জানতে তাঁকে ফোন এবং মেসেজ করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি, মেসেজেরও জবাব দেননি।
দিল্লির বিজেপি সূত্রের আরও দাবি, মুকুল রায়কে দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ এবং স্বাধীন ভাবে কাজের সুযোগ দেওয়ার আর্জিও শাহের কাছে জানিয়েছেন বাবুল এবং স্বপনবাবু। তবে সেটা অন্য বৈঠকে। আগামী সোমবার মুকুলের দিল্লি পৌঁছনোর কথা। মুকুল নিজে দাবি করেছেন, সেখানে তাঁর সঙ্গে শাহ বা অন্য কোনও নেতার বৈঠকের কর্মসূচি নেই। কিন্তু দিল্লির বিজেপি সূত্রের দাবি, শাহ বা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডার সঙ্গে মুকুলের বৈঠক হতে পারে। তার আগে শুক্রবারের ওই বৈঠক নতুন করে কৌতূহলী করে তুলছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। মুকুল এবং তাঁর মতো তৃণমূল থেকে আসা সংগঠকদের বঙ্গ বিজেপিতে কাজে লাগানোর বিষয়ে শাহ কোনও সমাধানসূত্র দেন কি না, সে দিকেই তাকিয়ে আছে রাজনৈতিক মহল।