(বাঁ দিকে) গৃহযুদ্ধে ধ্বস্ত সিরিয়া এবং উদ্ধার হওয়া ভারতীয়েরা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
গৃহযুদ্ধে ধ্বস্ত সিরিয়া থেকে উদ্ধার হওয়া ভারতীয়েরা ধাপে ধাপে দেশে ফিরছেন। শনিবার দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন আরও চার ভারতীয়। দেশে ফিরতে পেরে স্বস্তি পেলেও, গত কয়েক দিনের আতঙ্কের ছাপ এখনও কাটেনি তাঁদের চোখ-মুখ থেকে। অবিরাম গোলাগুলি, রকেট বর্ষণের শব্দ এখনও তাঁদের কানে বাজছে। দামাস্কাসে ভারতীয় দূতাবাসের উদ্যোগে তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় লেবাননের বেইরুটে। তপ্ত পরিস্থিতির কারণে বিমানে নয়, বাসে করেই তাঁদের সিরিয়ার সীমান্ত পার করানো হয়। পরে তাঁদের কাউকে বেইরুট থেকে দোহা হয়ে দিল্লি ফেরানো হয়েছে। কাউকে বেইরুট থেকে গোয়া হয়ে দিল্লিতে আনা হয়েছে।
শনিবার দিল্লিতে ফেরা ভারতীয়দের মধ্যে কেউ কর্মসূত্রে মাস চারেক ধরে সিরিয়ায় ছিলেন। কেউ আবার সপ্তাহ দুই আগেই গিয়েছিলেন সিরিয়ায়। তাঁরা জানান, এক দিন কাজ করার সময় তাঁরা দুই-তিনটি রকেট উড়ে আসতে দেখেন। এর পরেই ভয়ে তাঁরা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সিরিয়ায় আটকে পড়া ভারতীয়েরা নিরাপদে রয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে শুরু থেকেই পদক্ষেপ শুরু করেছিল দামাস্কাসের ভারতীয় দূতাবাস। তাঁদের ফোন পেয়ে দ্রুত তাঁদের দামাস্কাসে পৌঁছনোর জন্য বলা হয়। সেই মতো তাঁরা দামাস্কাসে ভারতীয় দূতাবাসে চলে আসেন। দিন দুয়েক দূতাবাসেই আশ্রয় নেন তাঁরা। এর পর সেখান থেকে তাঁদের লেবাননের রাজধানী বেইরুটে নিয়ে যান দূতাবাসের আধিকারিকেরা।
আতঙ্কের সেই দিনগুলিকে সঙ্গী করেই দেশে ফিরলেন তাঁরা। বিমানবন্দর থেকে বার হয়ে শোনালেন সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা। শেষের দিকে সিরিয়ায় কাটানো দিনগুলি যেন আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল তাঁদের কাছে। তাঁদের কথায়, এমন একটা দিনও কাটেনি যে দিন তাঁরা গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাননি। সিরিয়া সীমান্ত পার করে লেবানন পৌঁছনোর পরেও উৎকণ্ঠা পিছু ছাড়েনি তাঁদের। বিমানের টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা দেরি হওয়ায় প্রায় দু’দিন তাঁদের অপেক্ষা করতে হয়েছে বেইরুটে। সেই সময়েও দূতাবাসের আধিকারিকেরা তাঁদের থাকা-খাওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করেছিলেন বলে জানান সিরিয়া থেকে ফেরা ভারতীয়েরা।
শুক্রবার বিদেশ মন্ত্রক থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৭৭ জন ভারতীয়কে সিরিয়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। যাঁরা দেশে ফিরতে ইচ্ছুক তাঁদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে বেশ কয়েক জন ভারতীয় এখনও সেখানে রয়েছেন। তাঁরাও ভারতে ফিরতে চাইলে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদেশসচিব রণধীর জয়সওয়াল।