Nepal

দ্রুত ফিরিয়ে আনা হচ্ছে নেপালি জওয়ানদের

চিন যে-ভাবে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সৈন্য মোতায়েন করছে, তাতে ভারতীয় ফৌজও পাহাড়ি পরিবেশে যুদ্ধে পটু জওয়ানদের মোতায়েন করার প্রয়োজন উপলব্ধি করছে।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২০ ০৫:০৩
Share:

শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কিতে ভারত-নেপাল সীমান্ত। প্রতীকী ছবি

লকডাউনে নেপালে আটকে পড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন রেজিমেন্টে কর্মরত পাঁচ হাজার নেপালি জওয়ানকে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে চাইছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তাদের অনুরোধ পেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কোনও হয়রানি ছাড়াই দ্রুত ওই জওয়ানদের নেপাল থেকে নিয়ে এসে বিভিন্ন রেজিমেন্টে যোগদানের ব্যবস্থা করছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রককে ওই জওয়ানদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরও।

Advertisement

করোনার জন্য ভিন্‌ দেশ থেকে এ দেশে আসার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা আছে। বিদেশি উড়ানও চালু করেনি কেন্দ্র। এমন সময়ে নেপালের জওয়ানদের দেশে ফেরাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক তৎপর হয়ে উঠেছে কেন?

নিরাপত্তা সংস্থাগুলির বক্তব্য, নেপালি বা গোর্খা জওয়ানেরা পাহাড়ের বাসিন্দা। পাহাড়ি পরিবেশে কম অক্সিজেনেও তাঁরা স্বচ্ছন্দ। লাদাখের প্রান্তরে যে-জওয়ানদের মোতায়েন করা হচ্ছে, ওখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই তাঁদের প্রায় এক মাস লেগে যাবে। চিন যে-ভাবে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সৈন্য মোতায়েন করছে, তাতে ভারতীয় ফৌজও পাহাড়ি পরিবেশে যুদ্ধে পটু জওয়ানদের মোতায়েন করার প্রয়োজন উপলব্ধি করছে। তাই লকডাউনে নেপালে গিয়ে আটকে পড়া হাজার পাঁচেক জওয়ানকে ফেরাতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

সেনা সূত্রের খবর, সাতটি গোর্খা রেজিমেন্টের (৪০টি ব্যাটেলিয়ন) অন্তত ৪০ হাজার গোর্খা ভারতীয় ফৌজের অঙ্গ। অন্যান্য রেজিমেন্টেও নেপালের বাসিন্দারা যোগ দিতে পারেন। কিছু দিন আগে নয়াদিল্লির সেনা সদর দফতরের ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ শাখা থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে অনুরোধ করা হয়, নেপালে আটকে পড়া ৫০০০ জওয়ানকে জরুরি ভিত্তিতে ফেরানো প্রয়োজন। তাঁরা ভারতে আসার সময় অভিবাসন চেকপোস্টগুলিতে যেন তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আন্ডার সেক্রেটারি শামিম আহমেদ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও বিদেশ মন্ত্রক, বুরো অব ইমিগ্রেশনকে বিষয়টি জানিয়েছেন। নেপালি জওয়ানদের কাজে যোগদানের বিষয়টিকে অগ্রাধিকারের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রক।

ভারত-নেপাল সম্পর্কে সম্প্রতি চিড় ধরেছে। এই অবস্থায় নেপালি জওয়ানদের ভারতীয় ফৌজে ফেরানোকে ঘিরে যাতে কোনও বিতর্ক না-হয়, সেই বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রকও সজাগ। উত্তরাখণ্ডে রাস্তা, বিহারে নদীর উপরে সেতু নির্মাণে নেপালের আপত্তির জেরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে কাঠমান্ডুর ৬০টির বেশি স্কুলে মান্দারিন শেখানোর প্রকল্প নিয়েছে চিন। তিব্বতের

পরিকাঠামো নির্মাণ করতে গিয়ে নেপালের ৩৩ হেক্টর জমি চিন দখল করেছে বলে সে-দেশের সরকারি সমীক্ষাতেই ধরা পড়েছে। এই প্রেক্ষিতে নেপালে আটকে পড়া জওয়ানদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে চাইছে ভারত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement