একই ট্রেনে নীচে পণ্য আর উপরে যাত্রী বহনের ভাবনা রেলের। — প্রতীকী চিত্র।
মালগাড়ি চেপে সফর করার ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই। কারণ, ভারতীয় রেল সেই সুযোগ দেয় না। তা ছাড়া ধীর গতির মালগাড়িতে আর কে চাপতে চায়! কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি এমন দিন আসতে চলেছে, যখন জোরেই ছুটবে পণ্য এবং যাত্রী একসঙ্গে নেওয়া ট্রেন। যে দোতলা ট্রেনের এক তলায় থাকবে পণ্য আর উপরের তলায় যাত্রীরা। আবার যাত্রীদের বসার ও শোয়ার জায়গাও হবে একেবারে আধুনিক মানের। শৌচাগার থেকে প্যান্ট্রি সবই থাকবে সেই ‘টু ইন ওয়ান’ ট্রেনে।
ভারতে প্রথম বার এমন ট্রেন চালানোর তোড়জোড় আগেই শুরু হয়েছে। পঞ্জাবের কপূরথালায় রেলের কোচ ফ্যাক্টারিতে তৈরি হচ্ছে সেই বগি। যেগুলি খুব তাড়াতাড়ি চালানো হতে পারে। পরীক্ষামূলক চলাচলের পরে রেলের পরিকল্পনা ২০ বগির দু’টি ট্রেন চালানো হবে। কোন পথে সেই ট্রেন চলবে, কত ভাড়া হবে সে সব পরিকল্পনা না হলেও ইতিমধ্যেই সেই বগির নকশা চূড়ান্ত করেছে রেল বোর্ড। তিনটি নকশা তৈরির পরে তার থেকে একটি বেছে নিয়েছে বোর্ড। জানা গিয়েছে, এক একটি বগি তৈরি করতে খরচ হবে তিন কোটি টাকার মতো।
পঞ্জাবের কপূরথালায় রেলের কোচ ফ্যাক্টারিতে তৈরি হচ্ছে সেই বগি। — ছবি: সংগৃহীত
পরিকল্পনা অনুযায়ী এই বগিগুলি হবে বিমানের মতো। বিমানে যেমন ‘বেলি ফ্রেইট’ ব্যবস্থা থাকে ঠিক সেটাই হবে। নীচের তলায় ছ’টন পর্যন্ত পণ্য বহনের ক্ষমতা থাকবে। আর উপরে যাত্রী বসার ব্যবস্থা থাকবে এগজিকিউটিভ ক্লাসের মতো। মোট আসন হবে ৪৬টি। প্রতিটি বগিতেই একটি করে প্যান্ট্রি এবং শৌচাগার থাকবে।
করোনাকালে রেল পণ্য পরিবহণে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে শুরু করে। সেই সময়ে একসঙ্গে তিনটি পর্যন্ত মালগাড়ি একসঙ্গে জুড়ে চালানো হয়। এখন ছোটখাটো পণ্য পরিবহণও শুরু করেছে রেল। আগামী দিনে নতুন ‘কার্গো প্যাসেঞ্জার কোচ’ তৈরি হয়ে গেলে একই সঙ্গে পণ্য এবং যাত্রী পরিবহণের কাজ সহজ হবে। আবার যাত্রীরাও বিমানের মতো নিজেদের বড় ব্যাগ ট্রেনের নীচের তলায় রাখতে পারবেন।
রেল বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, অগস্ট মাসেই দেশের প্রথম ‘কার্গো প্যাসেঞ্জার কোচ’ পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হতে পারে। রেলের রিসার্চ অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন সম্মতি দিলেই আরও বগি তৈরি শুরু হয়ে যাবে।