সতেরো বছরে পা দেওয়া এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর (ব্রাজ়িল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা) সম্প্রসারণ নিয়ে বৈঠক উত্তপ্ত হতে চলেছে। ছবি: সংগৃহীত।
ব্রিকসভুক্ত রাষ্ট্রগুলির আসন্ন শীর্ষ বৈঠকে ‘কাজের কাজ’ কতটা হবে তা নিয়ে সন্দিহান কূটনৈতিক মহল। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও সংশয় নেই যে, সতেরো বছরে পা দেওয়া এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর (ব্রাজ়িল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা) সম্প্রসারণ নিয়ে বৈঠক উত্তপ্ত হতে চলেছে।
আজ চিন জানিয়েছে, ২২ অগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে উপস্থিত থাকছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ব্রিকসের অন্যতম সদস্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সশরীর উপস্থিত থাকতে পারছেন না, বেশ কিছু রাষ্ট্রে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের পরোয়ানা থাকার কারণে। ভিডিয়ো মাধ্যমে যোগ দেবেন তিনি।
কূটনৈতিক মহলের খবর, ব্রিকসের সম্প্রসারণ ঘটিয়ে নিজেদের দল ভারী করার জন্য আসন্ন সম্মেলনে চিন এ বার মরিয়া। এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে রয়েছে রাশিয়ার সমর্থন। মস্কো এবং বেজিংয়ের মৌলিক উদ্দেশ্য, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পশ্চিমের গোষ্ঠীগুলির প্রতিস্পর্ধী হয়ে ওঠা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ব্রিকস বৈঠকে প্রথমে না–যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ব্রিকসে যোগ দিতে ইচ্ছুক রাষ্ট্রের তালিকাটা দীর্ঘই। প্রায় ৪০টি দেশ তালিকায় নাম লিখিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, আর্জেন্টিনা, কিউবা, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও জোহানেসবার্গে উপস্থিত থাকার কথা। এই পরিস্থিতিতে মোদী-হাসিনার কোনও কথাবার্তা হয় কি না, তার উপরে নজর রাখছে কূটনৈতিক শিবির। তবে ব্রিকসের সম্প্রসারণ নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। কারণ, ব্রিকস সম্প্রসারণের নামে এই গোষ্ঠী না শেষ পর্যন্ত চিন-কেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক সংগঠনে পরিণত হয়। এক কর্তার মতে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশের ব্রিকসে অন্তর্ভূ্ক্তি কোনও সমস্যা নয়। কিন্তু এমন অনেক দেশ রয়েছে যারা বেজিংয়ের সুরেই সুর মেলায়। তারা কোন দেশ, তা অবশ্য স্পষ্ট করতে চায়নি ভারত।
নয়াদিল্লির মতে, ব্রিকসে আরও দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার আগে এই গোষ্ঠীকে আরও মজবুত এবং নিখুঁত করার দিকে নজর দেওয়া উচিত। যাতে সব কাজ ঠিক মতো হয়। অন্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর মতো ব্রিকসের কোনও নির্দিষ্ট সচিবালয় এখনও নেই। বহু মেকানিজ়ম রয়েছে যার নিয়মিত ব্যবহার হয় না। আবার একই কাজের জন্য একাধিক মেকানিজ়ম রয়েছে। এগুলিকে আগে সংস্কার করা প্রয়োজন বলেই মনে করে ভারত।
তবে সম্প্রসারণের প্রশ্নে ভারত আপাতত গররাজি থাকলেও এ ব্যাপারে রাশিয়া-চিনের যুগপৎ চাপকে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিহত করাও সহজ নয়। এ ব্যাপারে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচীর মন্তব্য, “ব্রিকসের সম্প্রসারণ নিয়ে ভারতের অবস্থান আগেও জানিয়েছি। এ ব্যাপারে যা করা হবে তা আলোচনার প্রেক্ষিতে সার্বিক ঐকমত্যের মাধ্যমেই হবে।”