নরেন্দ্র মোদী।
লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল আরও ১৯ দিন। অর্থাৎ, ৩ মে পর্যন্ত বন্দি থাকতে হবে ঘরে। তবে যে সব এলাকা ২০ এপ্রিলের পরে করোনা-মুক্ত হবে, সেখানে নিয়ম শিথিল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সংক্রান্ত শর্ত জানানো হবে আগামিকাল।
গত ২৫ মার্চ ২১ দিন লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন মোদী। আজ ছিল তার শেষ দিন। কিন্তু এখনও গোটা দেশেই করোনা সংক্রমণ বাড়ছে দ্রুত হারে। তাই গত শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অধিকাংশ মুখ্যমন্ত্রীই লকডাউন বাড়ানোর কথা বলেছিলেন। আজ সকাল ১০টায় জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণার পাশাপাশি অর্থনীতির চাকা নতুন করে গড়াতে করোনামুক্ত এলাকায় ২০ তারিখের পর লকডাউনের শর্ত কিছুটা শিথিল করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। লকডাউনের সময়ে কী করা উচিত, তা নিয়ে দেশবাসীকে সাত দফা পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। সংক্রমণের প্রশ্নে ভারতের পরিস্থিতি অন্য অনেক উন্নত দেশের তুলনায় ভাল বলে মোদী দাবি করলেও, পরীক্ষা-কিট ও চিকিৎসাকর্মীদের মাস্ক, গ্লাভসের অভাব নিয়ে একটি শব্দ খরচ করেননি।
লকডাউনের দ্বিতীয় পর্বে সংক্রমণমুক্ত এলাকায় আর্থিক কাজকর্ম শুরু করার দাবি তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীরা। প্রধানমন্ত্রী এ দিন জানান, আগামী এক সপ্তাহ রাজ্য-জেলা এমনকি থানা পর্যায়ে কড়া নজর রেখে দেখা হবে যে, লকডাউন কী ভাবে মানা হচ্ছে। যে সব এলাকা অগ্নিপরীক্ষায় সফল হবে, অর্থাৎ সংক্রমণ দূরে রাখতে সক্ষম হবে, সেখানে ২০ এপ্রিল থেকে লকডাউন কিছুটা শিথিল করার কথা ভাবা হয়েছে। তবে এলাকায় সংক্রমণ ফিরে এলে, তৎক্ষণাৎ লকডাউন পুরোপুরি ফিরিয়ে আনা হবে।
মোদীর সপ্তপদী
• বয়স্কদের খেয়াল রাখুন।
• লক্ষ্মণরেখা পালন করুন, মাস্ক ব্যবহার করুন।
• আয়ুষ মন্ত্রকের নির্দেশ পালন করুন।
• আরোগ্য সেতু অ্যাপ ডাউনলোড করুন।
• গরিবদের দেখভাল করুন।
• কর্মী ছাঁটাই করবেন না।
• করোনা-যোদ্ধা—ডাক্তার, নার্স, সাফাই-কর্মী, পুলিশদের সম্মান করুন।
বিরোধী সাত প্রশ্ন
• পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কী সুরাহা?
• পরীক্ষা-কিট নেই কেন?
• ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মী-নার্সদের সুরক্ষা কোথায়?
• স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় কেন মাত্র ১৫ হাজার কোটি টাকা? অর্থনীতির দাওয়াই কবে আসবে?
• রবি ফসল কাটা, ফসল কেনা, মজুত ও পরিবহণে কী ব্যবস্থা?
• গরিবদের বাড়তি ৫ কেজি চাল-গম দিয়েই দায় শেষ!
• কর্মী ছাঁটাই ঠেকাতে শুধু নির্দেশ! সুরাহা কোথায়?
মুখ্যমন্ত্রীদের আর্থিক প্যাকেজের দাবি নিয়ে কিন্তু নীরব রইলেন মোদী। গরিব, দিনমজুর বা শ্রমিকদের স্বার্থ দেখা তাঁর সরকারের অগ্রাধিকার বলে দাবি করলেও, তাঁদের জন্য আর্থিক সহায়তার কথা বলেননি। ছাড়ের ঘোষণা হয়নি শিল্পমহলের জন্যও। কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে কী চান, তা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন। পাশাপাশি, দেশবাসীর জন্য সরকার কী করছে, তা শুনতে চাইছিলেন আমজনতা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নীরব।’’
আরও পড়ুন: ভুল সত্ত্বেও হু-র নিন্দায় নেই ভারত
পরীক্ষা-কিট ও মাস্ক-গ্লাভসের অভাব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। দলের মতে, প্রচুর সংখ্যক পরীক্ষা করা উচিত ছিল সরকারের। এতে কোন এলাকায় করোনা অতিমারির রূপ নিয়েছে তা জানা যেত। সংক্রমিত এলাকাগুলিকে বিচ্ছিন্ন করা যেত। কিন্তু পৃথিবীতে যে সব দেশে খুবই কম পরীক্ষা হচ্ছে, তার অন্যতম ভারত। যদিও মন্ত্রকের যুক্তি, যা কিট রয়েছে তার সদ্ব্যবহার করতেই শুরু থেকে উপসর্গের ভিত্তিতে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভারতকে জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দেবে আমেরিকা
কেন্দ্রের কাছে এই মুহূর্তে উদ্বেগের হল, নতুন-নতুন এলাকায় করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া। আজ মোদীও বলেন, নতুন এলাকায় করোনা রোগীর খোঁজ পাওয়া চিন্তার বিষয়। নতুন করে হটস্পট তৈরির অর্থই হল এত দিনের পরিশ্রম জলে যাওয়া।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)