বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের সঙ্গে আস্থার সাম্প্রতিক ফাটলকে জুড়তে সক্রিয় সাউথ ব্লক তিস্তা চুক্তিকে সামনে নিয়ে এল। গত কাল বাংলাদেশের সঙ্গে জয়েন্ট কনসাল্টেটিভ কমিটির (জেসিসি) বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তাঁর বক্তৃতায় তিস্তা প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, “আমাদের দু’দেশের মধ্যে দিয়ে ৫৪টি নদী বয়ে গিয়েছে। এই নদীগুলি আমাদের ঐক্যকে ধরে রেখেছে, আমাদের বেঁচে থাকতে সহায়তা করছে। তিস্তা জলবণ্টনের প্রশ্নে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একই সঙ্গে যে আরও সাতটি নদীর তথ্য আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে, সেগুলির জলবণ্টনের প্রশ্নেও কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।”
দীর্ঘদিন পরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক স্তরের আলোচনায় তিস্তা প্রসঙ্গকে সামনে নিয়ে এলো বিদেশ মন্ত্রক। পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও জোরালো করতে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হওয়ার কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী। সম্প্রতি লকডাউন এবং তার পরবর্তী পর্যায়ে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত থেকে বাংলাদেশে পণ্য পরিবহণ আটকে ছিল। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর হয়। জয়শঙ্কর তাঁর বক্তৃতায় জানিয়েছেন, “দু’দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহণের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে। স্থলসীমান্তে সমস্যা হওয়ায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য রেলপথেও আমরা পাঠিয়েছি। সমস্যা তৈরি হলে বন্ধুত্বের পরিবেশে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করতে প্রস্তুত।”
গত কালের বৈঠকের পর অবশ্য যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশের দাবি এবং অস্বস্তির জায়গাগুলিকে খোলাখুলি ভাবেই স্বীকৃতি দিয়ে দ্বিপাক্ষিক আস্থা মজবুত করার জন্য একটা সক্রিয়তা দেখা গিয়েছে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে। সম্প্রতি পেঁয়াজ নিয়ে তিক্ততার পরিপ্রেক্ষিতে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ভারতকে ফের অনুরোধ করেছেন, যে সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে তাদের রফতানি নীতির বদল হলে বাংলাদেশে প্রভাব পড়ে, সেগুলির বদল সম্পর্কে আগে থেকে ঢাকাকে জানিয়ে দিতে হবে। এই সব ক্ষেত্রে রফতানি নীতির পরিবর্তন বাংলাদেশের বাজারকে প্রভাবিত করে।’ পাশাপাশি যৌথ বিবৃতিতে না থাকলেও ঢাকার পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাংলাদেশি পণ্য রফতানিতে শুল্ক ছাড়াও অন্যান্য বাধা রয়েছে। বাণিজ্যের পথও মসৃণ নয়। এই বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিতে নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করেছে ঢাকা।’