ফাইল চিত্র।
আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ বেশ কিছু উন্নত দেশ তাদের নাগরিকদের বিদেশ যাওয়ার জন্য বা অন্য দেশের নাগরিকদের তাদের দেশে আসার অনুমতির জন্য ভ্যাকসিন পাসপোর্টের প্রস্তাব দিয়েছে। অর্থাৎ কোভিড-টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নেওয়া থাকলে তবেই প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে। আর এমন প্রস্তাবেই বিপাকে পড়ে এর তীব্র বিরোধিতা করল ভারত। কারণ ভারতে জনসংখ্যার নিরিখে মাত্র ৩ শতাংশের প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। ফলে এই পাসপোর্ট চালু হলে অধিকাংশ ভারতীয়ই ওই সব দেশে যেতে পারবেন না।
শনিবার জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলি আয়োজিত স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট নিয়ে চড়া সুরে প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। এই বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, ভারত মনে করে এই বিষয়টি চালু করা উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য অত্যন্ত বৈষম্যমূলক এবং অসুবিধাজনক হবে। তিনি সরাসরিই মেনে নিয়েছেন, এটি চালু হলে অন্য দেশে যেতে বিপাকে পড়বেন ভারতীয়েরা। উন্নয়নশীল দেশগুলি এখনও ন্যায্য মূল্যের নিরাপদ ও কার্যকরী প্রতিষেধকের সরবরাহ এবং বিতরণ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
চলতি মাসেই অনুষ্ঠিত হবে জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক। ভারত এখানে আমন্ত্রিত সদস্য। এর আগে বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরে আজ বসেছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের বৈঠক। আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে দু’টি বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় মন্ত্রীরা। আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন পাসপোর্ট ধনী দেশগুলির জন্য ঠিক আছে। কিন্তু উন্নয়নশীল অথবা পিছিয়ে পড়া দেশের জন্য এই ব্যবস্থা কার্যকর করা সম্ভব নয়। তাঁর যুক্তি, উন্নয়নশীল অনেক দেশই এখনও ঠিক মতো প্রতিষেধক নেওয়া শুরু করতে পারেনি। টিকার জোগান, সরবরাহ এখনও সব দেশে সমান নয়। ভারতের সমস্যার প্রসঙ্গ তিনি সরাসরি না তুললেও ঘটনা হল, এ দেশে মাত্র তিন শতাংশ লোকের টিকাকরণ হয়েছে। টিকার জন্য সর্বত্র হাহাকার দেখা দিলেও তার জোগান মিলছে না। দেশবাসীর একটা বড় অংশের টিকাকরণের দায় মোদী সরকার নিজের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই কাঠগড়ায় মোদী সরকার। দেশের অন্দরে এই অবস্থার মধ্যেই ভ্যাকসিন পাসপোর্টের প্রস্তাব গৃহীত হলে বহু দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রেই বিপাকে পড়বেন বিরাট সংখ্যক ভারতীয়। তখন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও মুখ পুড়বে মোদী সরকারেরই। তাই আগেভাগেই বিষয়টি নিয়ে সুর চড়িয়েছে তারা।