জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। ছবি: পিটিআই।
চারদিকে শুধু জল আর জল। রাস্তা, বাড়ি সব জলে থই থই করছে। কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও আবার কোমরসমান। বানভাসি মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ছবিটা এখন এ রকমই। তার মধ্যেই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এখনই বৃষ্টির আশঙ্কা কাটছে না। কমলা সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। আর তার জেরে আতঙ্ক বাড়ছে নাগপুরবাসীদের।
শহরে গত দু’দিনের অতি ভারী বৃষ্টিতে আমবাজারি হ্রদ এবং নাগ নদী বিপদসীমা ছুঁয়ে ফেলেছে। আরও বৃষ্টি হলে নদী এবং হ্রদের জল লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করবে, তা ভেবেই ভয়ে কাঁটা হয়ে আছেন বাসিন্দারা। পাশাপাশি ঠাণে এবং রায়গড়েও হলুদ সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস জানিয়েছেন, শহরে ৩ ঘণ্টায় ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যার জেরে শহরের সবচেয়ে বড় হ্রদ উপচে পড়েছে। নাগ নদী বিপদসীমা ছুঁয়ে ফেলেছে।
ফডণবীস আরও জানিয়েছেন, শনিবার অতি ভারী বৃষ্টির জেরে শহরের ১০ হাজার বাড়িতে জল ঢুকেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে আগাম সতর্কতা হিসাবে শহরের স্কুল এবং কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। নাগপুরের পুরকমিশনার অভিজিৎ চৌধরি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, অনেক এলাকাতেই জল নেমেছে। তাই যে সব বাড়িতে জল ঢুকেছিল, সেই বাড়িগুলি থেকে কাদা সরানোর কাজ চলছে জোরকদমে। বানভাসি এলাকার বাসিন্দাদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১১ হাজার খাবারের প্যাকেট বিলি করা হয়েছে। পাশাপাশি জলবাহিত কোনও সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য পদক্ষেপ করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই সময়ে মশাবাহিত রোগ যেমন ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির যাতে প্রাদুর্ভাব না ঘটে তার জন্য ক্লোরোকুইন দেওয়া হচ্ছে। পরিষ্কার পানীয় জলও সরবরাহ করা হচ্ছে। পুর কমিশনার আরও জানিয়েছেন, বৃষ্টি এবং বন্যা পরিস্থিতির জেরে শহরের বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সেই পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। অনেক এলাকাতেই বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরে এসেছে।
শুক্রবার গভীর রাতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয় নাগপুরে। শনিবার পর্যন্ত সেই বৃষ্টি চলে। যার জেরে নাগ এবং পিলি নদী সংলগ্ন এলাকাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নাগ নদীর উপর একটি সেতু জলের তোড়ে ভেসে যায়। প্রবল বৃষ্টিতে আচমকা হড়পা বান আসায় শহরের ১০ হাজারের বেশি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বৃষ্টির জেরে মৃত্যু হয় চার জনের। ১৪টি গবাদি পশু জলের তোড়ে ভেসে যায়।