গরুর মহিমা নিয়ে গুজরাতের বিচারকের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
গো হত্যা বন্ধ হলেই পৃথিবীর যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। গরু পাচারের এক মামলায় এক যুবককে যাবজ্জীবন সাজার নির্দেশ দিতে গিয়ে এমনই পর্যবেক্ষণ করেছে গুজরাতের একটি আদালত। গরু নিয়ে মোদীর রাজ্যের আদালতের বিচারকের এ হেন মন্তব্য রবিবার প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
তাপি জেলা আদালতের বিচারক সমীর বিনোদচন্দ্র ব্যস এই মন্তব্য করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘‘গোবর দিয়ে তৈরি বাড়ি পারমাণবিক বিকিরণেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।’’ গোমূত্র বহু রোগের উপশম করে বলেও মন্তব্য করেছেন ওই বিচারক।
গরু, গোমূত্রের মাহাত্ম্য নিয়ে অতীতে বিজেপির একাধিক নেতার মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল দেশে। করোনা অতিমারি পর্বে গোমূত্রের উপকারিতা নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিজেপি নেত্রী সাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর। বলেছিলেন, ‘‘দেশি গরুর মূত্র করোনা আক্রান্তদের ফুসফুসের সংক্রমণ হওয়া থেকে বাঁচায়। আমার অনেক শারীরিক সমস্যা আছে। তবে আমি প্রতিদিন গোমূত্র পান করি।’’ যদিও পরে তিনি নিজেই করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন। করোনাকে হারানোর দাওয়াই হিসাবে গোমূত্র পানের কথা বলে বিতর্ক বাধিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতা সুরেন্দ্র সিংহও। ‘গরুর দুধে সোনা রয়েছে’ বলে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ বার গুজরাতের আদালতের বিচারক যে ভাবে গোমূত্রের মহিমার কথা বললেন, তা নতুন মাত্রা যোগ করল।
গোমূত্রের পাশাপাশি গরুর উপকারিতা নিয়ে বরাবরই সরব গেরুয়া বাহিনী। গোমাংস খাওয়া নিয়েও এ দেশে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। গোরক্ষার নামে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। সাম্প্রতিক কালে পশ্চিমবঙ্গে গরু পাচারের ঘটনার তদন্ত খবরের শিরোনামে রয়েছে। এই আবহে গরু পাচার সংক্রান্ত এক মামলায় গরুর মহিমা নিয়ে গুজরাতের বিচারকের পর্যবেক্ষণ নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে।
ওই বিচারক এ-ও বলেছেন, ‘‘গরুকে যদি অখুশি রাখা হয়, তা হলে সম্পত্তি গায়েব হয়ে যায়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘গরু কোনও প্রাণী নয়, গরু হল মা। ৬৮ কোটি পবিত্র স্থান ও ৩৩ কোটি দেবতার জীবিত গ্রহ হল গরু।’’
১৬টিরও বেশি গরু পাচারের অভিযোগে গত বছর অগস্টে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই মামলায় ওই যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজার পাশাপাশি ৫ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তবে এই মামলায় গরু নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ নজর কেড়েছে।