মাস্ক পরেই চলছে বাজার। ছবি— রয়টার্স।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া হিসাবের থেকে দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই ভারতে প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জন করোনভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। সম্প্রতি এ রকমই তথ্য উঠে এসেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর একটি সেরলজিক্যাল সমীক্ষায়। এমনকি এখনও দেশের একটি বড় অংশের মানুষ করোনাভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন বলে জানানো হয়েছে ওই সমীক্ষাতে।
বৃহস্পতিবার এই সমীক্ষার ফল জানিয়েছে আইসিএমআর। ১৭ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে চালানো হয়েছিল এই সমীক্ষা। ২১টি রাজ্যের ৭০টি জেলার ৭০০-র বেশি জায়গা জুড়ে করা হয়েছে এই সমীক্ষা। ১০ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যেই করা হয়েছে এই সমীক্ষা। এটি আইসিএমআর-এর করা তৃতীয় দফার সমীক্ষা। এর আগে একই এলাকার উপর আরও দু’টি সমীক্ষা করা হয়েছিল।
তৃতীয় দফার এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে ২৮ হাজার ৫৮৯ জনের উপর। তাঁদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ১৮ বছর বা তাঁর বেশি বয়সিদের ২১.৪ শতাংশ সেরোপজিটিভ। অর্থাৎ তাঁরা কোনও না কোনও সময় করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছিলেন। যা আইসিএমআর-এর অগস্টে হওয়া দ্বিতীয় সমীক্ষার থেকে ৭.১ শতাংশ বেশি। ১০ থেকে ১৮ বছর বসয়িদের মধ্যে এই সংখ্যাটা ২৫.৩ শতাংশ। এ নিয়ে আইসিএমআর-এর অন্যতম কর্তা বলরাম ভার্গব বলেছেন, ‘‘দিল্লিরএই সমীক্ষার অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ভারতের প্রায় ২১.৪ শতাংশ নাগরিক সেরোপজিটিভ। পাশাপাশি আরও দেখা যাচ্ছে যে, এখনও জনগণের বড় একটা অংশ কোভিডে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। তাই টিকা নেওয়া জরুরি।” মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোওয়ার মতো অভ্যাসে কোনও রকম আপস করা উচিত নয় বলেও জানান তিনি।
ভার্গব আরও জানিয়েছেন, গ্রামের থেকে শহরাঞ্চলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেক বেশি। গ্রাম্য এলাকায় যেখানে আক্রান্ত ১৯.১ শতাংশ, সেটা শহরের বস্তি এলাকায় ৩১.৭ শতাংশ। বস্তি বাদে শহরের অন্য এলাকায় তা ২৬.২ শতাংশ। দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের ২৫.৭ শতাংশ অর্থাৎ ৪ ভাগের ১ ভাগ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ইতিমধ্যেই। স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে সবথেকে বেশি আক্রান্ত আবার চিকিৎসক এবং নার্সরা। তাঁদের ২৬.৬ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছেন বলে উঠে এসেছে সমীক্ষায়।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, দেশে এখনও অবধি আক্রান্ত ১ কোটি ৮ লক্ষের কাছাকাছি মানুষ। তবে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমে হয়েছে দেড় লক্ষের কাছাকাছি। এখনও পর্যন্ত ৪৫ লক্ষাধিক মানুষকে দেওয়া হয়েছে টিকা। তবে আইসিএমআর-এর এই সমীক্ষা সতর্ক করছে, দৈনিক সংক্রমণ যতই নিয়ন্ত্রণে আসুক, করোনাকে অগ্রাহ্য করার মতো পরিস্থিতি কিন্তু এখনও আসেনি।