ভারতে চলছে করোনা টিকাকরণ। ছবি—পিটিআই।
ভারতে ৪৫ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মীকে ইতিমধ্যেই কোভিড টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকাকরণ শুরু হওয়ার ১৮ দিনের মধ্যে ৪০ লক্ষেরও বেশি জন টিকা পেয়েছেন। যা অন্যান্য দেশের টিকাকরণের হিসাবে অনেক দ্রুত। ব্রিটেন, আমেরিকা, ইজরায়েলের মতো দেশের থেকেও কম সময় ৪০ লক্ষের বেশি জনকে টিকা দিতে পেরেছে ভারত।
১৬ জানুয়ারি দেশ জুড়ে টিকাকরণ কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পর ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টিকা পেয়েছেন ৪০ লক্ষের বেশি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, বুধবার টিকা দেওয়া হয়েছে ৩ লক্ষ ১০ হাজার ৬৩৪ জনকে। সব মিলিয়ে এখনও অবধি দেশে টিকা পেলেন ৪৪ লক্ষ ৪৯ হাজার ৫৫২ জন। সরকারি তথ্য বলছে, বুধবার পর্যন্ত টিকা পেয়েছেন তালিকাভুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের ৪৭ শতাংশ। দেশে টিকা দেওয়ার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৯২ লক্ষ ৬১ হাজার ২২৭ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।
দিনের সাপেক্ষে টিকা দেওয়ার গতি কেমন? এই হিসাব করলেও বিশ্বের অনেক দেশের থেকে শুরু থেকেই এগিয়ে রয়েছে ভারত। প্রথম ৬ দিনেই ১০ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীকে দেওয়া হয়েছিল কোভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিনের ডো়জ। সেই অঙ্কটা ৪০ লক্ষে পৌঁছতে সময় লাগল মাত্র ১৮ দিন। একই পরিমাণ টিকাকরণ করতে আমেরিকা সময় নিয়েছিল ২০ দিন। ব্রিটেন এবং ইজরায়েলের লেগেছিল ৩৯ দিন।
শতাংশের হিসাবে টিকা দেওয়ার দৌড়ে সবার প্রথমে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ। ওই রাজ্যে তালিকাভুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের ৬৯.৪ শতাংশকে এখনও অবধি টিকা দেওয়া হয়েছে। তার পর রয়েছে রাজস্থান। সেখানে ৬৪.৭ শতাংশ টিকা পেয়েছেন। তবে মোট টিকা প্রাপকের সংখ্যায় দেশে প্রথম উত্তরপ্রদেশ। সেখানে ৪ লক্ষ ৬৩ হাজারেরে বেশি মানুষ করোনা টিকা পেয়েছেন। যা সেই রাজ্যের মোট তালিকাভুক্তের ৫১ শতাংশ। টিকার জন্য দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি স্বাস্থ্যকর্মীর নাম তালিকাভুক্ত করেছে মহারাষ্ট্র। সেখানে ৯ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮৫৭ জনে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই সংখ্যার মাত্র ৩৪ শতাংশকে টিকা দেওয়া হয়েছে সেখানে। দিল্লি (২৬.৬ শতাংশ), তামিলনাড়ু (২২.৬ শতাংশ), ছত্তীসগঢ় (২৯ শতাংশ), গোয়া (২৮.৩ শতাংশ) টিকা প্রদানের দৌড়ে কিছুটা হলেও পিছিয়ে। পশ্চিমবঙ্গ এবং কর্নাটকে সংখ্যাটা যথাক্রমে ৪১.১ এবং ৪০.৯ শতাংশ। ওড়িশা, কেরল, হরিয়ানা, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলি সেখানকার মোট স্বাস্থ্যকর্মীদের ৫০ শতাংশকে টিকা দিয়েছে।
মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা মিলিয়ে প্রায় ৩ কোটিকে করোনা টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। পুণের সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সোফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’ এবং ভারত বায়োটেকের তৈরি ‘কোভ্যাক্সিন’ কোভিডের প্রতিষেধক হিসাবে দেওয়া হয়েছে ভারতে।