ছবি পিটিআই।
প্রথম দিনে না হলেও, কোভ্যাক্সিন দেওয়ার দ্বিতীয় দিনে খাতা খুলল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। বৃহস্পতিবারেও শহরে ওই হাসপাতাল-সহ এসএসকেএম এবং আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভ্যাক্সিন দেওয়া হয়। তিনটি কেন্দ্র মিলিয়ে লক্ষ্যমাত্রা ৬০ জন থাকলেও মোট ৭২ জন এ দিন ওই প্রতিষেধক নিয়েছেন। তবে এ দিন কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক গ্রাহকদের কারোরই কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
তবে পোর্টাল নিয়ে সমস্যা এখনও কমেনি বলে স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন। পোর্টালে নাম না খুঁজে পাওয়ার কারণে এ দিনও এসএসকেএম হাসপাতালে বেশি গ্রাহককে কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে। ওই হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান সৌমিত্র ঘোষ বলেন, ‘‘কোভ্যাক্সিন নেওয়ার বিষয়ে মানুষের উৎসাহ বেড়েছে। দ্বিতীয় দিনে ৩৪ জন গ্রাহক ওই প্রতিষেধক নিয়েছেন। তবে পোর্টাল সমস্যার জন্য প্রায় ১০০ জনকে ফেরত পাঠাতে হয়েছে। ওই সমস্যা মিটলে আরও অনেকে কোভ্যাক্সিন নিতে পারবেন।’’ এ দিন আরজিকর-এ ২০ জন এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৮ জন করে গ্রাহক কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন।
চিকিৎসকদের ধারণা, ধীরে ধীরে মানুষের উৎসাহ বাড়বে। কোভ্যাক্সিনের পার্শ্বপ্রতিক্রায় ন্যুনতম এবং তা অনেক নিরাপদ বলেই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে জোরদার প্রচার শুরু করেছেন স্বাস্থ্য কর্তা, শিক্ষক চিকিৎসকেরা এবং ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান জ্যোর্তিময় পালের কথায়, ‘‘কোভ্যাক্সিন নেওয়া প্রতিটি গ্রাহকের তথ্য আইসিএমআরের কাছে রাখা থাকছে। প্রতিষেধকটির তৃতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে না আসলেও, তার অর্ন্তবর্তী রিপোর্ট নির্দিষ্ট সময় অন্তর আইসিএমআরে জমা পড়ছে। অতীতে পোলিও, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হুপিং কাশির প্রতিষেধক যে পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছিল, সেই ভাবেই কোভ্যাক্সিনও তৈরি হয়েছে। তাই সেটি নিয়ে অহেতুক আশঙ্কার কারণ নেই।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে প্রতিষেধক দেওয়ার ১৫তম দিনে ৪৫৫টি কেন্দ্রে কোভিশিল্ড দেওয়া হয়েছে। এ দিন ৪৫,৭০০ জনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও, প্রতিষেধক নেন ১৯,৫২২ জন (৪৩%)। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সারা দিন ধরেই পোর্টালের সমস্যা চলেছে। তাতে গ্রাহকদের হার কম হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যে ৫ লক্ষ ৮ হাজার ৪৭২ জনের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৩ লক্ষ ২০ হাজার ৪২৬ জন (৬৩ শতাংশ) প্রতিষেধক নিয়েছেন।’’
তিনি আরও জানান, এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগণা ছাড়া বাকি সব জেলাতেই দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা অর্থাৎ পুরকর্মী, পুলিশ, সাফাই কর্মী-সহ অন্যদের প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি জেলায় ব্যাপক সাড়া মিলেছে। মালদহতে ৩০০ জনের মধ্যে ২৬১ জন এবং জলপাইগুড়িতে ১৮০, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৯১, পূর্ব বর্ধমানে ১১২, আলিপুরদুয়ারে ১৬৬, ঝাড়গ্রামে ১৪৭ জন প্রতিষেধক নিয়েছেন। ওই সব ক’টি জেলাতেই প্রথম সারির যোদ্ধাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০০ জন করে। গোটা রাজ্যে প্রায় ২ হাজার জন প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা এ দিন প্রতিষেধক নিয়েছেন। তবে সে ক্ষেত্রেও কো-উইন অ্যাপ বিভ্রাট সমস্যা বাড়িয়েছে বলেও জানিয়েছেন আধিকারিকরা।