—ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস ছেড়ে দিলেন প্রবীণ নেতা এসএম কৃষ্ণ। তাঁকে আর প্রয়োজন নেই কংগ্রেসের— দল ছাড়ার পর এমনই মন্তব্য কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা দেশের প্রাক্তন বিদেশ মন্ত্রী কৃষ্ণর। তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা শুরু হলেও, কৃষ্ণ তাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে তিনি রাজনীতি থেকে সরে যাচ্ছেন, এমন ঘোষণাও এসএম কৃষ্ণ করেননি।
‘‘আমার মনে হচ্ছিল, কংগ্রেসের আর আমাকে প্রয়োজন নেই। যে সব নেতা তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন, দল এখন তাঁদের উপর নির্ভর করে। অভিজ্ঞ নেতা-কর্মীদের আর দল চায় না।’’ কংগ্রেস ছাড়ার পর এমনই মন্তব্য করেছেন এসএম কৃষ্ণ।
৫০ বছর ধরে কংগ্রেসে ছিলেন এসএম কৃষ্ণ। দলের সর্বোচ্চ স্তরের নেতাদের মধ্যে অন্যতম তিনি। ইন্দিরা গাঁধীর মন্ত্রিসভায় তিনি মন্ত্রিত্ব করেছেন। রাজীব গাঁধী ক্যাবিনেটেরও সদস্য ছিলেন। ২০০৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরানো হয় কৃষ্ণকে। তবে তাঁকে তখন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল করা হয়েছিল। ২০০৮ সালে তিনি রাজ্যপাল পদে ইস্তফা দেন এবং ফের কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে অংশ নেন। কংগ্রেস সে বার কৃষ্ণর রাজ্যে ক্ষমতায় ফেরেনি। কিন্তু পরের বছর অর্থাৎ ২০০৯ সালে হওয়া সাধারণ নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের জন্য দিল্লির মসনদে ফিরেছিল কংগ্রেস নেতৃত্বধীন ইউপিএ সরকার। প্রবীণ নেতা কৃষ্ণকে সেই সরকারের বিদেশ মন্ত্রী করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: সেনা সরতেই বিজেপির ত্রাতা হতে রাজি পওয়ার
২০১৪ পর্যন্ত কেন্দ্রে মন্ত্রিত্ব করেছেন তিনি। এর মাঝে ২০১৩ সালে কর্নাটকে ক্ষমতায় ফেরে কংগ্রেস। সে নির্বাচনের প্রচারে কৃষ্ণ পরিশ্রমও করেছিলেন যথেষ্ট। কিন্তু তাঁর সেই অবদান সত্ত্বেও কর্নাটকের কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁকে উপযুক্ত গুরুত্ব দেয় না বলে কৃষ্ণের অভিযোগ। তিনি কারও নাম করেননি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জি পরমেশ্বরের বিরুদ্ধেই যে তাঁর মূল অভিযোগ, সে ইঙ্গিত বেশ স্পষ্ট করেই দিয়েছেন।
শনিবার রাতে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন এসএম কৃষ্ণ। তবে সিদ্দারামাইয়া এবং পরমেশ্বরের দাবি, তাঁরা কৃষ্ণর এই সিদ্ধান্তের কথা জানেন না। এর মাঝেই জল্পনা শুরু হয়েছে, এসএম কৃষ্ণ বিজেপিতে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে খুব শীঘ্রই তাঁর বৈঠক হবে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে কৃষ্ণ সে কথা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, সব গুজব। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করছেন না। তা হলে কি রাজনীতিই ছেড়ে দিচ্ছেন কৃষ্ণ? দলত্যাগী নেতার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, রাজনীতি তিনি ছাড়বেন না। তবে অন্য কোনও দলে যোগ দেবেন, নাকি নিজেই কোনও দল গঠন করবেন, তা এখনও স্পষ্ট হওয়া বাকি।