প্রতীকী ছবি।
এক করোনা আক্রান্তের জোড়া ফুসফুস প্রতিস্থাপন করে নজির গড়লেন হায়দরাবাদের এক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। কোভিড রোগীর ফুসফুস প্রতিস্থাপিত হওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। তবে জোড়া ফুসফুস প্রতিস্থাপনের ঘটনা ভারতে এর আগে হয়নি। মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে এমন এক জনের ফুসফুস আকাশপথে কলকাতা থেকে নিয়ে এসে প্রতিস্থাপিত করা হয় বছর বত্রিশের ওই যুবকের শরীরে। সফল অস্ত্রোপচারের পরে শুক্রবার হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন রিজ়ওয়ান নামে আদতে চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা ওই যুবক।
কৃষ্ণ ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (কিমস)-এ ফুসফুস প্রতিস্থাপন বিভাগের প্রধান, চিকিৎসক সন্দীপ আট্টাওয়ারের নেতৃত্বে এক দল চিকিৎসক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া ফুসফুস প্রতিস্থাপন করে দেশে এই নজির গড়লেন। হাসপাতালের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘সারকোয়ডোসিস’ নামে এক বিশেষ ধরনের অসুখে ভুগছিলেন ওই যুবক। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছিল তাঁর ফুসফুসে। যার জেরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল দ্রুত। এর মধ্যে চিকিৎসা চলাকালীনই করোনা সংক্রমিত হয়ে পড়েন রিজ়ওয়ান। গত আট সপ্তাহে তাঁর শরীরে অক্সিজেনের চাহিদার মাত্রা ১৫ লিটার প্রতি মিনিট থেকে বেড়ে ৫০ লিটার প্রতি মিনিটে পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এই অবস্থায় রিজ়ওয়ানের প্রাণ বাঁচাতে দুটো ফুসফুসই প্রতিস্থাপন করা ছাড়া আর কোনও পথ খোলা ছিল না চিকিৎসকদের সামনে।
এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক সন্দীপ আট্টাওয়ার বলেন, ‘‘মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে এমন এক জনের ফুসফুস রিজ়ওয়ানের সঙ্গে মিলে যায়। তড়িঘড়ি কলকাতা থেকে তা উড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়। অস্ত্রোপচারটি অত্যন্ত জটিল ছিল। রোগীর পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণ, তাঁকে ‘বায়ো-বাব্ল’ পরিবেশে রাখা এবং কমপক্ষে ছ’সপ্তাহ সাবধানে ওষুধ প্রয়োগের পরেই তা করা সম্ভব হয়েছে।’’ নতুন জীবন ফিরে পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন রিজ়ওয়ানও। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচারের আগে যা অবস্থা ছিল তাতে বাঁচার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারছি, সেটাই পরম প্রাপ্তি।’’