প্রতীকী ছবি।
স্ত্রী-র প্রতি কোনও টান নেই। তাঁকে কেবলমাত্র ‘টাকা কামানোর যন্ত্র’ হিসাবেই দেখেন স্বামী। একে মানসিক নির্যাতন ছাড়া কী-ই বা বলা যায়! বিবাহ বিচ্ছেদের এক মামলায় এই মন্তব্য করল দিল্লি হাই কোর্ট। ওই মামলাকারী মহিলার আবেদনে সাড়া দিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদেও সায় দিয়েছে আদালত। আদালতের পর্যবেক্ষণ, দিল্লি পুলিশে চাকরি পাওয়ার পর স্ত্রী-র প্রতি আগ্রহ জন্মেছিল তাঁর স্বামীর। কেবলমাত্র স্ত্রী-র রোজগারের দিকে ওই ব্যক্তির নজর ছিল বলেও মনে করছে আদালত।
দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি বিপিন সাংঘি এবং বিচারপতি যশমীত সিংহের বেঞ্চের মতে, স্ত্রী-র সঙ্গে আবেগেময় সম্পর্ক বলতে কিছুই ছিল না তাঁর স্বামীর। এটি আবেদনকারী মহিলার কাছে মানসিক যন্ত্রণার শামিল। ফলে দম্পতির বিয়েতে ছেদ টানার জন্য এই যুক্তি যথেষ্ট। মামলার রায় দিয়ে গিয়ে বিচারপতি যশমীতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘বিবাহিত মহিলারা সাধারণত একটি পরিবার শুরু করার ইচ্ছে যাপন করেন। তবে এ ক্ষেত্রে মহিলার প্রতি তাঁর স্বামীর কোনও মানসিক টান ছিল না। বিয়ে টিকিয়ে রাখতে যত্নশীলও ছিলেন না স্বামী। বরং স্ত্রী-র রোজগারের দিকেই নজর ছিল তাঁর।’’
স্বামীর থেকে আলাদা হওয়ার জন্য প্রথমে পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই মহিলা। তাঁর অভিযোগ, মদ্যপায়ী স্বামী কোনও কাজকর্ম করেন না। স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগও করেছেন তিনি। পাশাপাশি স্ত্রী-র দাবি, সব সময়ই টাকার চাহিদা তাঁর স্বামীর। হতদরিদ্র পরিবারের ওই মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর বিয়ে হয়েছিল ১৩ বছর বয়সে। সে সময় তাঁর স্বামীর বয়স ছিল ১৯। বিয়ের পর থেকে কখনই বাপেরবাড়িতে যেতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। তবে ২০১৪ সালে দিল্লি পুলিশে চাকরি পাওয়ার পর সে অনুমতি মেলে তাঁর।
এই মামলার রায় দিতে গিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘এই ঘটনাই দম্পতির মধ্যে দূরত্ব তৈরি করেছিল। যা আবেদনকারীর মনে মানসিক আঘাতের জন্য যথেষ্ট। এর জেরে মানসিক নির্যাতনে শিকার হয়েছেন আবেদনকারীর। স্ত্রী-র রোজগারের জন্যই তাঁকে নির্যাতন করেছেন স্বামী। এমনকি, টাকা রোজগারের যন্ত্র ছাড়া স্ত্রী-কে আর কিছুই মনে করেন না তিনি। দিল্লি পুলিশে চাকরি পাওয়ার পরেই তাঁর প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন স্বামী। এ ধরনের বৈষয়িক আচরণই তাঁর পক্ষে মানসিক ভাবে যন্ত্রণাদায়ক। কোনও রকম মানসিক সম্পর্ক ছাড়া এই বিবাহ আবেদনকারিকে নির্যাতন করার পক্ষে যথেষ্ট।’’