চরনজিৎ সিংহ চন্নি-রাহুল গান্ধী ফাইল চিত্র ।
বেশ কিছুদিন ধরেই কংগ্রেসের তরফে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী-মুখ কে হবেন তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে কখনও চরনজিৎ সিংহ চন্নি-র নাম উঠে আসছিল, আবার কখনও নভজ্যোত সিংহ সিধু-র নাম উঠে আসছিল পঞ্জাব রাজনীতির অন্দর থেকে। এমনকি দল কার নাম ঘোষণা করবে এই নিয়ে পঞ্জাব কংগ্রেসের অন্দরেও টালমাটাল চলছিল। এই নিয়ে দল দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেছে বলেও কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছিল। তবে রবিবার পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চন্নি-র নাম ঘোষণা করেন ভারতীয় যুব কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন তথা সাংসদ রাহুল গান্ধী। মনে করা হচ্ছিল দলের ভিতরে জটিলতা বোধহয় আরও বাড়বে। কিন্তু কৌশল করে রাহুল সেই জটিলতা সহজেই কাটালেন বলেই মনে করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত যে তাঁর না, রবিবারের জনসভায় তাও স্পষ্ট করেন তিনি। তিনি এই নিয়ে পঞ্জাবের মানুষের সঙ্গেও কথা বলেছেন বলেও তিনি জানান। এই ঘোষণার পিছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। আমি পঞ্জাবের মানুষ, যুব এবং কার্যকরী সমিতি-র সদস্যদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে তাঁরা কী চায়। আমার নিজস্ব একটা মতামত আছে। কিন্তু তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ যে আপনাদের মতামত কী। আর পঞ্জাবের বাসিন্দারা আমাকে জানিয়েছেন যে, তাঁরা এমন একজনকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চান যিনি গরিবদের কথা ভাববেন।’’
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে হবে তা ঘোষণার কৌশলে রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় দিলেন রাহুল। অন্তত এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
চন্নি-র নাম ঘোষণা করার পর রাহুল বলেন, ‘‘চন্নি এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তিনি দারিদ্র্য বোঝেন। কেউ কি কখনও তাঁর মধ্যে কোনও ঔদ্ধত্য দেখেছেন? উনি সমস্ত স্তরের মানুষদের সঙ্গে দেখা করেন। চন্নি গরীব মানুষদের কন্ঠস্বর।’’
এর পরেই প্রশ্ন উঠেছিল, ২০১৭ থেকে কংগ্রেসে যোগদান করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা নভজ্যোত সিংহ সিধু এবং তাঁর অনুগামীদের কীভাবে সামলাবেন রাহুল। কিন্তু তাতেও সফল ভাবে উত্তীর্ণ তিনি। কংগ্রেসের নেতা নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে কথা বলার সময় তিনি বলেন ‘‘রাজনৈতিক নেতারা ১০-১৫ দিনে জন্মান না। টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিয়েও নেতা তৈরি হন না। আমি নিজেও ২০০৪ সাল থেকে রাজনীতি করে আসছি। কিন্তু আমি গত ছয়-সাত বছরে যা শিখেছি তা এর আগে শিখিনি। রাজনীতি করা মুখের কথা নয়।’’
তবে এই দিনের জনসভায় একদা ‘‘তাঁকে যেন দলের শো-পিস করে না রাখা হয়’’, মন্তব্য করা সিধুর গলাতেও প্রাথমিক ভাবে দেখা মিলল না আক্ষেপের সুর। উল্টে তিনি এই দিন বলেন, ‘‘আমি ইতিমধ্যেই রাহুলের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছি। পঞ্জাবের মানুষ যদি আমাকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত রাখেন, তবুও আমি আগামী মুখ্যমন্ত্রীকে সমর্থন করব।’’