হিমাচল প্রদেশে ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হতেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে। ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এই পদের দাবিদার হিসাবে মুখ খুলেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংহের স্ত্রী প্রতিভা সিংহ। তিনি বলেন, “প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বীরভদ্রের মুখ চেয়েই ভোট দিয়েছেন রাজ্যবাসী।” সরাসরি না বললেও তিনি যে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন প্রতিভা। তবে একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বীরভদ্র সিংহের পরিবার কোনও দর কষাকষির মধ্যে যাবে না। বিধায়কদের মতামত এবং হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তই মেনে নেবেন তিনি। শুধু প্রতিভা একা নন, একাধিক নাম উঠে আসছে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য। যদিও তাঁরা প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। একাধিক দাবিদারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী বাছাটাই এখন কংগ্রেসের মাথাব্যথার বড় কারণ হতে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনীতিকদের একাংশ।
প্রতিভার পর যে নামটি ঘোরাফেরা করছে কংগ্রেসের অন্দরে তিনি ৩ বারের বিধায়ক সুখবিন্দর সিংহ সুখু। এ বারের নির্বাচনে তিনি নাদৌন থেকে লড়েছেন। ২০১৩ সালে থেকে ২০১৯ পর্যন্ত হিমাচলের কংগ্রেস কমিটির সভাপতি ছিলেন সুখু। এ বারের নির্বাচনে প্রচার কমিটির মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সুখুকে। ঘটনাচক্রে, বীরভদ্রের পরিবারের সঙ্গে সুখুর সম্পর্ক খুব একটা ভাল নয়। কিন্তু তার পরেও তাঁকে প্রচার কমিটির প্রধানের দায়িত্ব দেয় কংগ্রেস হাইকমান্ড। দলের একটি সূত্রের দাবি, নির্বাচনে সুখুকে টিকিট দেওয়া নিয়েও প্রবল আপত্তি জানিয়েছিলেন প্রতিভা সিংহ।
আবার মুকেশ অগ্নিহোত্রীর নামও উঠতে শুরু করেছে। ঘটনাচক্রে, মুকেশের সঙ্গে বীরভদ্রের পরিবারের সম্পর্ক ভাল। রাজনীতিকদের একাংশ মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে প্রতিভা যদি পিছিয়েও যান, তা হলে তিনি মুকেশকে এই পদের জন্য সমর্থন দিতে পারেন। উনা জেলার হারোলি বিধানসভা আসনের ৪ বারের বিধায়ক মুকেশ। চতুর্থ যে নাম এই পদের দৌড়ে রয়েছে, সেটি হল ঠাকুর কল সিংহ। তিনি হিমাচল কংগ্রেসের প্রবীণতম নেতা। দারাং বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ৮ বারের বিধায়ক। বীরভদ্র সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। ওই পরিবারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ভাল। তবে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হলেও বয়স তাঁর প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। ৭৭ বছর বয়স কলের।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আশা কুমারীও পিছিয়ে নেই। ৬ বারের ডালহৌসির বিধায়ক আশা কুমারীকে পঞ্জাব কংগ্রেসের দায়িত্ব দিয়েছে দল। শুধু তাই-ই নয়, তিনি ছত্তীসগঢ়ের মন্ত্রী টিএস সিংহের বোন। এ ছাড়াও হর্ষবর্ধন চৌহান এবং রাজেশ ধর্মানির নামও উঠে আসছে। ঘটনাচক্রে, হর্ষবর্ধন আবার রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত।
এক পদের জন্য একাধিক দাবিদার। আর তাই ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হতেই মুখ্যমন্ত্রী কাকে করা হবে সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ কংগ্রেস নেতৃত্বের। হিমাচলে জয় কংগ্রেসের মুখে হাসি ফোটালেও, মুখ্যমন্ত্রী পদে একাধিক দাবিদারের বিষয়টি অস্বস্তিও বাড়িয়েছে।