পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার জবাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বালাকোটে ঢুকে জইশ ঘাঁটিতে অভিযান চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। একেবারে নিঁখুত লক্ষ্যে হামলা চালানো সম্ভব হয়েছিল ‘স্পাইস বোমা’র দৌলতে।
২০১৫ সাল থেকে বোমা ব্যবহার করে আসছে ভারতীয় বায়ুসেনা। বৃহস্পতিবারই ৩০০ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছে ভারত এবং ইজরায়েলের মধ্যে। এই বার ১০০ 'স্পাইস-২০০০' বোমা কিনছে ভারত। আগামী তিন মাসের মধ্যেই সেগুলি নয়াদিল্লিকে সরবরাহ করবে জেরুজালেম।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এই স্পাইস বোমাগুলির কার্যকারিতা সুনির্দিষ্ট। ৬০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপ করে লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করে দেওয়া যায়।
স্পাইস বোমার সবচেয়ে বড় সুবিধা এর আকার। আকারে এই বোমা ছোট কিন্তু ভয়ঙ্কর ধ্বংসাত্মক প্রকৃতির। তুলনায় ছোট হওয়ায় বহন করা সহজসাধ্য। মাটির নীচে বাঙ্কার কিংবা দুর্গের মতো করে তৈরি করা কংক্রিটের নির্মাণ ধ্বংস করতে স্পাইস বোমার বিকল্প নেই।
নিরাপদ দূরত্ব থেকে আঘাত করা যায়। ৬০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপ করে লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করে দেওয়া যায়। আকাশে ঘন মেঘ বা প্রচণ্ড খারাপ আবহাওয়াতেও এর কার্যকারিতা নষ্ট হয় না। ফলে যে কোনও পরিবেশে শত্রুপক্ষের ঘাঁটি ধ্বংস করতে কার্যত অপ্রতিরোধ্য এই বোমাগুলি।
আকারে ছোট এবং প্রযুক্তিগত এই সব সুবিধার জন্যই ভারতীয় বায়ুসেনা স্পাইস-২০০০ বোমা গত প্রায় চার বছর ধরে ব্যবহার করে আসছে। প্রযুক্তিগত দিক থেকেও শত্রুপক্ষের ঘাঁটি ধ্বংস করার ক্ষেত্রে স্পাইস বোমার বিকল্প খুঁজে পাওয়া কঠিন।
‘দ্য উইক’ ম্যাগাজিনের মতে, এই বোমায় রয়েছে অভ্যন্তরীণ নেভিগেশন প্রযুক্তি। তার সঙ্গে স্যাটেলাইট গাইডেড ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল সেন্সর থাকায় লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত ভাবে আঘাত হানা সম্ভব।
ফ্রান্সের কাছ থেকে কেনা মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমানের সাহায্যে এই বোমাগুলি ছোড়া যায়। শেষ ব্যবহৃত হয়েছে বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের ডেরায় আকাশপথে বোমাবর্ষণের সময়।
বায়ুসেনার দাবি, ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোটে বায়ুসেনার ‘মিরাজ ২০০০’ যুদ্ধবিমান বেশ কিছুটা নীচে নামে। তার পর সুযোগ বুঝে পাঁচটি ‘স্পাইস ২০০০’ পেনিট্রেটর গ্লাইড বোমা ফেলে। কিন্তু ‘ক্রিস্টাল মেজ়’-এর মতো লাইভ ভিডিয়ো করার ক্ষমতা নেই ‘স্পাইস ২০০০’-এর। তাই আকাশপথে জঙ্গি ডেরায় হামলা চালানোর ভিডিয়ো নেই বায়ুসেনার কাছে।
রিপোর্টে বায়ুসেনা জানিয়েছিল প্রায় ১০০ কেজি বোমা ফেলা হয়েছিল। সেই হামলায় এই স্পাইস বোমা ব্যবহার করার ফলে যথার্থ লক্ষ্যে আঘাত হানা সম্ভব হয়েছিল, জানিয়েছিলেন বায়ুসেনা আধিকারিকরা।