খরস্রোতা সড়কে ভাসছে গাড়ি। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
রাস্তা না কি নদী, তা বোঝার উপায় নেই। কোথাও কোমরসমান জল। কোথাও আবার গলা ছুঁই ছুঁই! সেই সঙ্গে প্রবল স্রোত। রাতভর প্রবল বৃষ্টিতে এমনই অবস্থা রাজধানী হায়দরাবাদ-সহ তেলঙ্গানার বিস্তীর্ণ অংশের। বহু জায়গাতেই সেতুর উপরেও জল উঠেছে। বালানগর হ্রদের পাড় ভেঙে বসতি অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শনিবার হায়দরাবাদ ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১৫০ মিলিমিটার। এর আগে মঙ্গলবার-বুধবার জুড়ে ১৯০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। তার পর দুর্যোগ কিছুটা কমলেও অবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। তার মধ্যেই রাতভর প্রবল বৃষ্টিতে বেহাল হয়ে পড়েছে দেশের ‘টেক সিটি’।
শনিবার রাত থেকেই জলবন্দি শহরবাসীর একাংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিস্থিতির খবর এবং ছবি আপলোড করতে থাকেন। কোথাও বাড়িতে জল ঢুকে পড়ায় বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছেন ছাদে। কোথাও রাস্তায় ভাসছে গাড়ি। নিজামের শহরে বেশ কিছু বাড়িও ধসে পড়েছে। রবিবার সেই সব ছবি আর ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন: বেনজির বৃষ্টি বাড়াচ্ছে উদ্বেগ, তেলঙ্গনাতেই মৃত অন্তত ৩০
হায়দারবাদ বিমানবন্দরগামী রাস্তাও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে কুর্নুল এবং বেঙ্গালুরুগামী যানবাহন চলাচল বন্ধ। হায়দরাবাদ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সামশাবাদ) বিমানবন্দরের যাত্রীদের শহরের বাইরের ‘রিং রোড’ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।
সাইবারাবাদের রাস্তার হাল সোশ্যাল মিডিয়ায়
এ দিন সকাল থেকে বৃষ্টির মধ্যেই পরিস্থিতি সামলাতে পথে নেমেছেন ‘গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন’ (জিএইচএমসি)-এর কর্মী এবং আধিকারিকেরা। জিএইচএমসি-র দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের প্রধান বিশ্বজিৎ কাম্পাতি বলেন, ‘‘প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে জঞ্জাল অপসারণ এবং জমা জল বার করার কাজ আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’’
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই ধারাবাহিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ চিন্তা বাড়িয়েছে তেলঙ্গানা সরকারের। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের ছেলে তথা পুরমন্ত্রী কে টি রামা রাও জিএইচএমসি এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: মোট আক্রান্ত প্রায় ৭৫ লক্ষ, দেশে ফের ২৪ ঘণ্টায় মৃত সহস্রাধিক
মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, এ দিন মাঝারি বৃষ্টিপাত হবে হায়দরাবাদ-সহ তেলঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায়। বৃহস্পতিবার তেলঙ্গানা সরকার জানায়, মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগে মোট ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট আর্থিক ক্ষতির অঙ্ক প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকা। তবে শনিবার রাতের দুর্যোগে নতুন করে প্রাণহানির খবর মেলেনি।