জলমগ্ন দিল্লির রাস্তা। হাঁটুজল ভেঙে সাইকেল চালাচ্ছে এক কিশোর। ছবি: পিটিআই।
আবারও ঝেঁপে বৃষ্টি দিল্লিতে। তার জেরে জলমগ্ন রাজধানীতে দুর্ভোগ আরও বাড়ল। বাড়ল যানজটও। যদিও স্বস্তির বিষয়, যমুনার জলস্তর আর বাড়েনি। বরং ধীরে ধীরে কমছে। সে কারণে রবিবার সকালে খুলে দেওয়া হয়েছে চন্দ্রওয়ালের জল পরিশোধন প্রকল্প। খুব শিগগিরই খোলা হবে ওয়াজিরাবাদ জল পরিশোধন প্রকল্প। ওখলার প্রকল্পটি আগেই চালু করা হয়েছে। তাই মনে করা হচ্ছে, দিল্লিতে পানীয় জল সরবরাহ এ বার স্বাভাবিক হতে চলেছে। বন্যা দুর্গত প্রতি পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সোম এবং মঙ্গলবার দিল্লিতে যমুনা নদী তীরবর্তী এলাকার সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই এই খবর জানিয়েছে।
টানা বৃষ্টির কারণে জলমগ্ন রাজধানী। যমুনার জলস্তর বৃদ্ধি নজির গড়েছে। গত সপ্তাহে যমুনার জলস্তর হয়েছিল প্রায় ২০৮.৬৬ মিটার। তার আগে ১৯৭৮ সালে জলস্তর বেড়ে হয়েছিল ২০৭.৪৯ মিটার। এখন পর্যন্ত ওটাই ছিল সর্বোচ্চ। যমুনার জলস্তর বেড়ে যাওয়ার কারণে গত বৃহস্পতিবার দিল্লির তিনটি জল পরিশোধন প্রকল্প বাধ্য হয়ে বন্ধ রাখা হয়েছিল। ফলে জলসঙ্কটে ভুগছিলেন দিল্লিবাসী। এ বার জলস্তর নেমে যাওয়ার এক এক করে তা খোলা হচ্ছে।
যমুনার জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জল ঢুকে যায় লালকেল্লা, সুপ্রিম কোর্টেও। জলের নীচে ছিল রাজঘাট, আইটিও চত্বর। রাতভরের চেষ্টায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে জল ছেঁচে বার করা হয়। যমুনার তীরবর্তী বহু নিচু জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় সেখানকার বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছিলেন পুরাতন দিল্লির যমুনা বাজারের সরকারি শিবিরে। ২,৭০০টি অস্থায়ী শিবির বানানো হয়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ওই শিবিরগুলিতে ২৭ হাজার মানুষকে ঠাঁই দেওয়া হয়। সেখানেও ঢুকে পড়েছে প্লাবনের জল। ফলে আবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়লেন তাঁরা।
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল জানিয়েছেন, যমুনার জল ধীরে ধীরে কমছে। পরিস্থিতি খুব শীঘ্রই স্বাভাবিক হবে। তবে এখনও বন্যার আশঙ্কা কাটেনি। শনিবার সন্ধ্যায় ফ্রান্স এবং সৌদি আরব সফর থেকে ফিরে দিল্লির উপরাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনাকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্লাবনের খবর নেন। সাক্সেনা জানিয়েছেন, মোদী সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। দিল্লির বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ রবিবার পর্যন্ত দিল্লির স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। দিল্লির বাণিজ্য সংগঠনগুলি জানিয়েছে, টানা বৃষ্টির কারণে ব্যবসায় ২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।