নির্যাতিতার পরিবার। ছবি: পিটিআই।
হাথরসের নির্যাতিতার মৃত্যুর পর এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। তাঁর সুবিচারের দাবিতে দেশ জুড়ে আন্দোলন, বিক্ষোভ হচ্ছে। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন রাজনীতিকরা। পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন। আশ্বাসও দিয়েছেন ন্যায়বিচারের। কিন্তু তার পরেও কোথাও যেন একটা ভয় গোটা পরিবারকে গ্রাস করছে। আর সেই ভয়ের কারণেই গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে চাইছেন তাঁরা। বুধবার এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করেছেন নির্যাতিতার বাবা ও ভাই।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার। তার পর পুলিশ, প্রশাসন থেকে আদালত— এ ক’দিনে জল গড়িয়েছে অনেক দূর। নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গোটা দেশ তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিলেও সেই ঘটনার পর থেকে পুরো গ্রাম এবং প্রতিবেশীদেরও যেন অচেনা মনে হচ্ছে। গ্রাম জুড়ে একটা নিস্তব্ধতা। প্রতিবেশীরা এড়িয়ে চলছেন। পরিবারের দিকে ক্রমাগত দোষারোপের তির ছুটে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে গ্রামে থাকা নিরাপদ মনে করছেন না তাঁরা, দাবি নির্যাতিতার ওই পরিবারের।
নির্যাতিতার বাবা বলেছেন, “এ গ্রামে থাকার আর কোনও উপায় দেখছি না। গোটা পরিস্থিতি নিয়ে খুবই আতঙ্কে আছি। এখানে কায়িক পরিশ্রম করে উপার্জন করেছি। অন্য কোথাও গিয়ে একই ভাবে পরিশ্রম করব। কিন্তু এ গ্রামে আর নিরাপদ বোধ করছি না। কোনও আত্মীয়ের বাড়ি বা অন্য কোথাও চলে যেতে চাই।” তাঁর আরও দাবি, “চারদিকে গুজব ছড়াচ্ছে। পরিবারের উপর ক্রমশ চাপ তৈরি হচ্ছে। এমনকি ছেলেকে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, এই গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।”
আরও পড়ুন: হাথরস নির্যাতিতা ও অভিযুক্তের মধ্যে ১০৪ ফোন কল! জানাল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ
অন্য দিকে, নির্যাতিতার ভাই বলেন, “গ্রামের কেউই আমাদের খোঁজ নিচ্ছেন না। এমনকি, কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল সে কথাও কেউ জিজ্ঞাসা করছেন না। গোটা গ্রামই যেন আমাদের এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে।”
গত ১৪ সেপ্টেম্বর চার উচ্চবর্ণের যুবকের বিরুদ্ধে হাথরসের তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ১৫ দিন লড়াই করার পর গত ২৯ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে আমজনতা থেকে রাজনীতিকরা। যোগী আদিত্যনাথের সরকার এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ‘অপদার্থতার’ অভিযোগ উঠেছে। জল গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। ক্রমাগত চাপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত সিবিআইয়ের তদন্তের সুপারিশ করেছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার।