হরিয়ানা বিধানসভায় চলছে আস্থা-বিতর্ক। ছবি: পিটিআই।
শপথ নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আস্থাভোট উতরোলেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিংহ সাইনি। ৯০ সদস্যের হরিয়ানা বিধানসভায় বিজেপির ৪১ বিধায়কের পাশাপাশি ছ’জন নির্দল এবং হরিয়ানা লোকহিত পার্টির গোপাল কান্ডাও ধ্বনিভোটে বিজেপি সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সদ্য-প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর আস্থাভোটের পরেই বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছেন।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মঙ্গলবার পর্যন্ত হরিয়ানায় বিজেপির সহযোগী জেজেপি (জননায়ক জনতা পার্টি)-র ১০ জন বিধায়ক ভোটাভুটির সময় অধিবেশন কক্ষে ছিলেন না। জেজেপি প্রধান তথা সদ্যপ্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালা দলীয় বিধায়কদের ভোটভুটিতে অংশ না-নেওয়ার জন্য হুইপ জারি করেছিলেন। ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত পাঁচ জেজেপি বিধায়ক বুধবার বিধানসভা ভবনে হাজির হলেও আস্থাভোটের আগে চলে গিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার বিজেপির পরিষদীয় দল এবং সমর্থনকারী বিধায়কদের বৈঠকে জেজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানিয়েছিলেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। সেই বৈঠকে ছিলেন না জেজেপি বিধায়কেরা। এর পরেই রাজ্যপালের কাছে গিয়ে ইস্তফা দেন খট্টর। সন্ধ্যায় হরিয়ানার নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কুরুক্ষেত্রের সাংসদ সাইনি। তাঁর সঙ্গেই বিজেপির কানওয়ার পাল, মুলচাঁদ শর্মা, জয়প্রকাশ দালাল, বনওয়ারি লাল এবং নির্দল বিধায়ক রঞ্জিত চৌটালা মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। রঞ্জিত সম্পর্কে সদ্যপ্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালার কাকা।
আস্থাভোটের বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী সাইনি তাঁর পূর্বসূরি খট্টরের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘‘খট্টরজির মুখ্যমন্ত্রিত্বে হরিয়ানা উন্নয়নের নতুন মাত্রা ছুঁয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে আসন সমঝোতা নিয়ে টানাপড়েনের জেরেই দুষ্মন্তের দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বিজেপি। সূত্রের খবর, দুষ্মন্ত হিসার এবং ভিওয়ানি-মহেন্দ্রগড় লোকসভা আসনের দাবিতে অনড় থাকায় জোট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। জেজেপি জানিয়েছে, আসন্ন লোকসভা ভোটে সে রাজ্যের ১০টি আসনেই একক ভাবে লড়বে তারা।
সে ক্ষেত্রেও জাঠ ভোটের বিভাজনের সুবিধা বিজেপি পেতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে হরিয়ানায় বিধানসভা ভোটে গরিষ্ঠতা না-মেলায় জাঠ নেতা দুষ্মন্তের সঙ্গে জোট করে সরকার গড়েছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছিলেন খট্টর। উপমুখ্যমন্ত্রী করা হয় দুষ্মন্তকে। তবে খট্টর এবং দুষ্মন্তের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে মতবিরোধ লেগেই ছিল। হরিয়ানার রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, ২০০০ সালের বিধানসভা ভোটের আগে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বংশীলালের দল হরিয়ানা বিকাশ পার্টির সঙ্গেও এমনই একতরফা ভাবে সমঝোতায় ইতি টেনে দিয়েছিল বিজেপি।